হতাশ হওয়া মহাপাপ পর্ব- ৪ (ফিরেএসো)

হতাশ হওয়া মহাপাপ

হতাশ হওয়া মহাপাপ। সর্বশক্তিমান আল্লাহর বড়ত্ব সস্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই সচারচর হতাশার উদ্ভব ঘটে। হতাশায় হাল ছেড়ে দেওয়াটা কারো জন্য উচিত নয়। এমনকি সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতেও অন্তরের গহীনে (আশার) বাতি নিবুনিবু করতে থাকে। সর্বদা আল্লাহর অসীম রহমতের কথা স্মরণ করুন। তিনি কখনো কাউকে পরিত্যাগ করেন না।


জীবনে আপনি যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই যান কেন, নিজের আস্থকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর রাকতে শিখুন। তাঁর কাছে কৃত পাপের স্বীকারোক্তি দেন, তাঁর উপর আস্থা রাখুন, তাঁর কাছে কান্না করুন, তাঁর কাছে কাকুতি মিনতি করুন। ধীরে ধীরে আপনার জীবন বদলে যাবে। এই দুনিয়া আপনার কাছে মুখ্য হয়ে ওঠবে না। আপনি তাঁর নিকটতর হবেন।

আপনার  আশেপাশের পরিস্থিতি যখন অর্থবোধক মনে না হয়, সম্ভবত তখন কিছু না বলাটাই উওম। দু’আ করুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহই (সবকিছুর) পুর্ণ নিয়ন্ত্রক।

আপনি যে নিখুঁত নন, এটা মেনে নিয়ে সমান্তিতে থাকতে শিখুন। মুখোশের আড়ালে (নিজেকে) লুকাবেন  না। অন্তরকে শূন্য করুন এবং আল্লাহকে নিজের ভয় ও সন্দেহের কথা বলুন।

যখন আপনি নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষ দ্বারা  নিরাশ হন, তখন আশাহত হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে হতাশ করবেন  না। নিজের সবচেয়ে দুর্বল মুুহূর্তেও তাঁর নিকটবর্তী হন।  

সালাতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরুন। সালাত  এই দুনিয়ার মন্তকে তাড়িয়ে দেয়, তাই সালাতকে উপেক্ষা করবেন  না। যখন যাথাযথভাবে সালাত আদায় করা হয়, তখন তা প্রশান্তির উৎসে পরিণত হয়। 

জীবনে আপনি যাই কবেন না কেন, সর্বদা সর্বশক্তিমান আল্লাহর বেঁধে দেওয়া সীমার মাঝে মাঝে থাকার কথা স্মরন রাখবেন। এই সীমা রেখোর বাহিরে আপনি যাই অর্জন করেন না কেন, তা পাপে পনিণত হয়। জীবন ক্ষণস্থায়ী ও  সমসাময়িক। পরিশেষে পার্থিব জীবন কখনো মুল্যবান হবে না।

ওয়াদা ভঙ্গ করা গুরুতর পাপ। এটা এমন এক পাপ, যিনি তা করেন, তার অন্তরে যে মুনাফিকির বীজ লুকিয়ে আছে, তা প্রকাশ করে দেয়। আমাদের অনেকেরই ঘন ঘন এমনটি করার অভ্যাস রয়েছে। এটাকে হালকাভাবে নেবেন না। (কেননা), বিচার দিবসে এ ধরনের লোকেরা মুনাফিকদের কাতারে পুনরুত্থিত হবে।

যাদি অনুশোনা করতে চান, তবে  তা এখনই করুন

যাদি অনুশোনা করতে চান, তবে  তা এখনই করুন। যদি বদলাতে চান, তবে তা এখনই । উপযুক্ত সাময়ের জন্য অপেক্ষ করবেন না। আল্লাহ আপনাকে যে সময় দিয়েছেন, তা নষ্ট করবেন না। 

ওই বন্ধুকে মুল্য দেন, যে আপনাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকটবতী কেরে। যে সম্পর্ক আপনার এবং আল্লাহর মাঝে দূরত্ব সৃষ্ঠি করে, তা উপেক্ষ করুন। 

আপনার সৃষ্ঠিকর্তার সাথে (আপনার যে সম্পর্ক রযেছে ) কখনো তা হারাবেন না । প্রতিদিনের সালাতের ব্যাপারে  মনোযোগী হন। সালাত ঠিক করুন, সালাতকে নিখুত করুন। আপনার পূর্ব  আস্থাকে আল্লাহর ওপর রাখুন। আপনাকে হতাশ কারবেন না।

পার্থির এই দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এরং অনুরাগই আমাদের অন্তরের যাবতীয় ব্যাধির উৎস।  এই দুনিয়া থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করাটা আমাদের অন্তরকে ওই আকাঙ্কার দিকে চালিত করুন, যা চিরস্থায়ী-অর্থৎ আখিরাত।

সর্বশক্তিমন আল্লাহর যদি আপানাকে হেদায়েতের জন্য বাছই করেন, তবে কৃতজ্ঞ হন। মনে রাখবেন, যাকে ইচ্ছ তিনি হেদায়েত দিন এবং তাঁর রহমত, যা আপনাকে আচ্ছাদিত করেছে। তাঁকে ধর‌্যবাদ দেন। যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত, তাদেরকে ছোট করে দেখবেন না। যেকোনো সময় তিনি তাদের অবস্থা বদলে দিতে পারেন। 

অবিরত অনুশোচনা করুন। আল্লাহর (নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আমাদের অতীত-বর্তমান পাপ; ভুলে যাওয়া বা উপোক্ষিত পাপের জন্য তিনি যেন আমাদেরকে শাস্তি না দেন, এই দু’আ করুন। 

আপনার সমস্যা অন্যের কাছে না নিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিয়ে যান। বিনয়ের সাথে আপনার দুশ্চিন্তা, ভয় , উদ্বিগ্নতা, দুর্বলতার কথা তাঁর সাথে খোলামেলাভাবে বলুন এবং ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করুন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ! শক্তি ও উদ্দেশ্য দিয়ে আমাদের অন্তরকে নবায়ন করতে আমরা আপনার কাছে মিনতি করছি। আমাদের অতীত পাপ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আপনার নিকটবর্তী  হতে সাহায্য করুন। সর্বদা আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করুন। 

যখন কষ্ট পান, তখন শোকের পরিবর্তে তা উদাযাপন করুন। আমাদের জীবনে যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপস্থিতি রয়েছে, তা তুলে ধারার খোদায়ি পন্থা এটা। 

আসুন আমরা নিজেদের সাথে সৎ হই। মাঝে মধ্যে আমরা সবাই বোকামি করি। আমরা জানি, আমরা  এমন কাজ করি, যা আমাদের করা  উচিত নয়। কিন্ত আমরা যা কিছুই করি না কেন, তা সর্বশক্তিমান আল্লাহর চিরন্তন রহমতের বাহির নয়। মনে রাখবেন, আমরা ভুল করি, তিনি করেন না। 

যখন আপনি এ ব্যাপারে অবগত যে, আপনি পাপ করেছেন এবং আপনি আপনার সীমাবদ্ধতা স্পের্কে সচেতন, তখন জেনে রাখুৃন, এ ধরনের চিন্তা আল্লাহর তরফ  থেকে আগত আশীর্বাদের ন্যায়। তিনি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং আপনার জন্য এই অপেক্ষার আছেন যে, আপনি তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করবেন। সঠিক পথে ফিরতে কঠোর সংগ্রাম করুন। গাড়িমসি করবেন না। এখনই শুরু করুন।

চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না । এগুলো সর্বশক্তিমান আল্লাহর হাতে ছেড়ে দেন। উদ্বিগ্ন ও হঠাৎ আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই । দু’আ করুন। আল্লাহকে বলুন। তিনি আপনাকে এসব থেকে বের করে আনবেন। 

কষ্টের মাঝে সৌন্দর্য আছে। যখন কষ্টের মধ্যে থাকি, তখন আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাথে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত হই, আতঃপর আমরা পরিতৃপ্ত হই। এভাবেই তিনি আমিাদেরকে তাঁর আরও কাছে টেনে আনেন। 

যাই হোক না কেন, আপনার অন্তরকে পরিশুদ্ধও রাখুন~

আমরা অনেক বেশি তালগোল পাকাই। আপনি উপযুক্ত নন বলে শয়তান আপনাকে হাল ছেড়ে দেওয়ার কুমন্ত্রণা ‍দেয়। হাল ছাড়াবেন না।সর্বশক্তিমান আল্লাহকে তাঁরই রহমত দ্বারা আহ্ববান করুন। 

আপনাকে সহ বা কিংবা ছাড়াই জীবন (তার আপন গতিতে) বয়ে চলে। অন্যরা আপনার ব্যাপারে কি বলে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। আপন সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে কাজ করুন। আমাদের মৃত্যু বা সমাপ্তি অতি সন্নিকটে। 

আমাদের সমস্যা হচ্ছে: ভুল করার পর আমরা আমাদের অন্তরকে কঠিন হতে দিই। যাই হোক না কেন, আপনার অন্তরকে পরিশুদ্ধও রাখুন। আল্লাহ আপনাকে (অবশ্যই) ‍পুরস্কৃত করবেন। 

এই দুনিয়াতে আপনি যত সম্পদই অর্জন করেন না কেন, আপনার অন্তর যদি সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাথে সংযুক্ত না থাকে, তবে আপনার ‍সুখ ক্ষণিকের। 

পাপ করার পর যদি খারাপ বোধ করেন, তবে আশাবাদী হন। এখানে আশা রয়েছে। এটা বলে দেয়- সর্বশক্তিমান আল্লাহ চাচ্ছেন যে, আপনি ওঠে দাঁড়ান এবং সঠিক পথে আবার ফিরে আসুন। 

ওই অন্তরের ব্যাপারে সতর্ক হন, যা কঠিন হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত অনুশোচনা করুন। সর্বশক্তিমন আল্লাহর নিকটবর্তী হতে থাকুন। নিজের কৃত পাপের ভয়ে আর্তনাদ করুন। 

গতকাল যা করেছেন, তা থেকে আপনি আরও ভালো হতে চান, সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করুন। ইতোমধ্যে যা করেছেন, তার জন্য তিনি আপনাকে ক্ষামা করবেন। 

অন্যকে অপমান করার জন্য যদি আপনি তাদের ভুলত্রুটিগুলো তুলে ধরেন কিংবা তাদের দুর্বলতা তুলে ধরনে চান, তবে সাবধান হন। 

সালাত ‍দিয়ে দিন শুরু করুন এবং সালাতকে দিয়েই দিন শেষ করুন। এর মধ্যে যা কিছু আছে, সবই তার উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে যাবে। আপনি স্বস্তির অনুভূতি লাভ করবেন এবং আপনার অন্তর স্বস্তিতে থাকবে।

কিছুই সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য ছোট বা বড় নয়। কেবল তাঁকে (আপনার মনের সকল কথা) বলুন। তিনি আপনার দু’আ শুনতে শুনতে কখনো বিরক্ত হন না। আপনার এই দু’আ অনুসন্ধানকে তিনি ভালোবাসেন।

আপনি কাদের সাথে চলাফেরা করেন, সে ব্যাপারে সতর্ক  হন। তারা আপনার অশান্তির কারণ হতে পারে। তারা ‍যদি আপনার বাহ্যিক বেশভূষা, দুনিয়াবি মরর্যদা মাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার মোহাচ্ছন্নতা নিয়ে অত্যধিক মনোযোগী হয়, তবে হয়তো আপনি নিজেকে ওই সওা থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরাচ্ছেন, যাঁর থাকার কথা উচিত ছিল আপনার জীবনের কেন্দ্রে, অর্থাৎ সবশক্তিমান আল্লাহ।

যদি ইতিবাচক পরিবর্তন চান, তবে আপনার কর্ম এবং এগুলোর  সাথে যা আপনি করছেন , তা যাচাই করুন। বসে থেকে অন্যকে বা সর্বশক্তিমান আল্লাহকে দোষ দিয়ে আপনি কোনোভাবেই পরিবর্তনের আশা করতে পাবেন না। ওই জিনিসগুলো কি, যা আপনি বারবার করে যাচ্ছেন এবং যেগুলো আপনাকে একঘেয়ে জীবনে অভ্যস্ত করে রেখেছে? সেগুলো বদলাতে শুরু করুন।

যদি সম্পদ দ্বারা আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে থাকেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ ‍দেন। এটা নিশ্চিত করুন যে, ওই সম্পদকে আপনি আপনার হাতে রেখেছেন, অন্তরে নয়। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে (ওই সম্পদ থেকে সমাজের কল্যাণে) দিয়ে যান। 

আজ আপনি যাই করুন না কেন, অন্যের ব্যাপারে গালগল্প করা এবং তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক কথা বলাকে সরাসরি না বলুন। আপনার গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে সমপূণ করুন এবং সেগুলোর জন্য দু’আ করুন।

যার দুনিয়াবি সম্পদ রয়েছে, সে-ই সবচেয়ে ভাগ্যবান নয়, বরং সে-ই সবচেয়ে ভাগ্যবান, যিনি অনুশোচনা করতে দ্রুতগামী, যিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং নিজের যাবতীয় পাপের জন্য অনুতাপ করেন।

যে সময়টিতে আপনি নিজেকে অন্যের ওপর নির্ভরশীল করবেন, ঠিক সে সময় আপনি নিজেকে (আরও) হতাশ হিসাবে আবিষ্কার করবেন। (এমনটি না করে বরং) সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর  নির্ভর করুন। 

ব্যর্থতাকে কখনো ভয় করবেন না। এটা আমাদেরকে মূল্যবান শিক্ষা দেয়, যা আমাদের জীবনে বদলে দিতে পারে। এটা আমাদেরকে নম্রতার স্বাদ নিতে শেখায়, যা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার সর্বোওম সময়।

যদি হতাশ বা আশাহত না হতে চান, তবে সম্পদ বা মানুষের পেছনে ছুটা বন্ধ করুন। ওই সওার সাথে নিজের অন্তরকে সংযুক্ত করুন, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। (তবেই) আপনে শান্তি খুঁজে পাবেন।

আপনার করা ছোট সব পাপকে প্রতিনিয়ত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবেন না। এগুলো যোগ হবে না, এমনটি মনে করা বেশ বিপজ্জনক। নুড়ি পাথরের মতো শীঘ্রই এগুলো পাহাড়ে পরিণত হবে। 

ওই লোকদের দলে শামিল হবেন না, যারা পরিক্ষা মুখোমুখি হয়েছে বলে তাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া হচ্ছে: সালাত পরিত্যাগ করা। কষ্টের মাঝে সালাতই সর্বাপেক্ষা মূল্যবান। 

জীবনে সম্পদ, খ্যাতি ও ক্ষণস্থ্যয়ী জিনিসের পেছন ছুটা বন্ধ করুন। শেষ অবধি আপনি হতাশ হবেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহই সুখের সত্যিকার উৎস। তাঁর প্রতি মনোযোগী হন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার উপর বিরক্ত, কখনো এমনটি মনে করবেন না। আপনি ‍যদি অনবরত পাপও করেন, তথাপি অনুশোচনা করুন। কেননা, যখন আপনি অনুশোচনা করেন, তখন তিনি তা ভালোবাসেন। 

আমারা সকলেই সুখ চাই। তাই যখন আর্শীবাদে ধন্য হন, তখন ধন্যবাদ দেন। পরিক্ষার সময় ধৈর্যশীল হন। যখন পাপ করেন, তখন অনুশোচনা ও ‍ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আর নিজের জীবনের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করুন। 

আল্লাহর রহমত থেকে কখনো আশা হারাবেন না। ক্ষমা প্রার্থনা করা থেকে আপনি বেশ দূরে চলে গেছেন, এমনটি কখনো বিশ্বাস করবেন না। তিনি আপনার চেষ্টা সম্পর্কে অবগত। কেননা, তিনিই আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ, আমরা যতই ব্যস্ত হই না কেন এবং আমাদের জীবন যতই চাপের মাঝে থাকুক না কেন, আপনার জন্য সময় বরাদ্দ রাখুতে আমাদের সামর্থ্যবান করুন এবং আপনার রহমত ও ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ আমাদেরকে দেন।

’একদিন আমি অনুশোচনা করবো এবং আপন পথ পাল্টাবো’, বারবার এটা বলতে থাকুবেন না। আপনি বিলম্ব করেন, শয়তান তা ভালোবাসে। বরং (অনুশোচনা ও পরিবর্তনের কাজটি) আজই করুন এবং আল্লাহর ক্ষমা তালাশ করুন। 

এই বিষয়টি ভুলে যাবেন না যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর রহমতের জন্য আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আপনার অতীত, আপনার দুঃথকে মুছে দিতে পারেন এবং দিতে পারেন আপনাকে আপনার করা সমস্ত ভুলে মুক্তি। (তাই) তাঁকে ডাকুন। 

ভুল করাটাই সবকিছুর শেষ নয়। আমরা যদি ভুল থেকে শিখি, তবে (জেনে রাখা উচিত) এরপরেও জীবন রয়েছে। আল্লাহকে তালাশ করুন। তিনিই পারেন আপনার জীবনকে আরও ভালো ভাবে বদলে দিতে। 

অতি আত্মবিশ্বাসী হবেন না। সত্যিকারের মুমিন তার সৃষ্টিকর্তাকে রাজি করতে সর্বদা কঠোর শ্রম ‍দিয়ে যায়। সর্বদা বিনয়ী হন এবং তাঁর রহমতে আশা রাখুন। 

আপনি ভুল করেছেন। আপনি আপনার অতীত নিয়ে লজ্জিত। আত্ম-অনুকম্পার মাঝে বসবাস করবেন না। যদি আন্তরিক পরিবর্তন চান, তবে দায়িত্ব নেন। আল্লাহ আপনাকে পথ দেখাবেন। 

আপনার অন্তরে অহংকারকে বাসা বাঁধতে দেবেন না। আপনার বাড়ি যতই সুন্দর হোক না কেন, শেষ অবধি কি রাজা, কি প্রজা -সবই একই কবরের মাটিতে মিশে যাবে। 

যখন আপনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর পথে সংগ্রাম করেন, তখন অন্যের স্বীকৃতি বা অনুমোদনের ব্যাপারে আপনি কোনো চিন্তাই করেন না। আপনি আপনার অগ্রাধিকারনে জানেন।  

অনবরত অনুশোচনা করতে থাকুন এবং প্রতিনিয়ত তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা করুন। একবিন্দু পাপকে অনুতাপের নদীতে পরিণত হতে দেবেন না। আন্তরিক হন এবং মনপ্রাণ দিয়ে আল্লাহকে ডাকুতে থুকুন। 

অনেকেই তাদের সম্পদ ও স্বাস্থ্য নিয়ে অত্যধিক যত্নবান এবং তা রক্ষার জন্য অনেক দূর পর্যন্ত যায়। কিন্ত দুঃখজনকভাবে তারা তাদের আত্মিক অবস্থাকে অবহেলা করে। 

আপনি কি অন্তরে শূন্যতা অনুভব করেন? যদি মনে হয় আপনার অনেক আছে, কিন্ত কিছু একটার উপস্থিতি আপনার জীবনে নেই, তবে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করুন এবং নিজের জীবনের বদলে যাওয়ার দৃশ্য অবলম্বন করুন । 

প্রায়শই মানুষ নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে অন্যের দোষক্রটির সন্ধানে নেমে পড়ে। আপনার ব্যাপারে প্রত্যেকেরই একই মত রয়েছে। (তাই এসব নিয়ে না ভেবে) সৃষ্টিকর্তার প্রতি মনোনিবশ করুন। 

সময়ের ন্যায় আর্শীর্বাদকে আমরা ‍প্রাপ্য একটা বিষয় ধরে নেই। অথচ ভুলে যাই যে, সময়ই জীবন। একবার চলে গেলে, আপনি তা আর ভেরত পাবেন না। অত্যধিক বিলম্ব আগেই ওঠুন। 

যতকিছুই ঘটুক না কেন, আপনার অন্তরকে কঠিন হতে দেবেন না। আল্লাহর কথা, তাঁর  নিয়ামত এবং কম  ভাগ্যবানদের কথা ভাবুন। এগুলো আপনার অন্তরকে অবশ্যই নরম করবে। 

রাজা কি প্রজা, (ক্ষমতাসীন কি সাধারণ), আমাদের সবারই সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে সমান প্রবেশাধিকার রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাঁকে তালাশ করবো, ততক্ষণ তিনি আমাদের জন্য সর্বদা সেখানেই আছেন। 

অন্যকে কষ্ট দিওয়ার ব্যাপারে সতর্কহন। আপনি যাকে কষ্ট দিচ্ছেন, হয়তো সে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ভালোবাসার একজন। আপনি তো তাঁর ক্রিাধকে নিজের কাঁধে তুলে নিতে এবং নিজের সৎ কর্মকে নষ্ট করতে চান না। 

অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন

চলমান সকল ঘটনা প্রবাহের মাঝে থেকেও জীবনের বিশৃঙ্খলা থেকে দূর সরে থাকা শিখুন। নিজের আত্নাকে অপন স্রষ্টার সাথে পুনরায় সংযুক্ত করুন। আপনার আত্না শান্তি খুঁজে পাবে। 

সব সময় ‍হুঁশিয়ার থাকুন এবং সর্বদা আত্না-সংযম চর্চা করুন। শয়তান আমাদেরকে সম্ভাব্য সকল পথে প্রলুব্ধ করতে চাইবে। আমাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করানোকে শয়তানের জন্য কঠিন করে তুলুন। 

সব সময় আমরা (অনলাইন দুনিয়ার সাথে) সংযুক্ত ‍থাকতে চাই। ঠিক যে মুহূর্তে আমরা তা হারিয়ে ফেলি, তখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি, এমনকি রাগান্বিত পর্যন্ত হই। তবে আপন সৃষ্টিকর্তার সাথে সংযুক্ত হওয়ার মতো অপরিহার্য বিষয়টি কতটা গুরুত্ব রাখে (তা একবার ভাবুন)? 

আপনার আকাঙ্খা, সন্দেহ ও অহংকার, যা আপনার যাবতীয় আত্মিক রোগের উৎস, সেগুলো (নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য) কাজ করুন। অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন, যতক্ষণ  না তা ভালো, খাঁটি ও সত্য ‍জিনিসকে “দেখতে” সমর্থ হয়।

যত বেশি সম্পদ জমা করবেন, সৃষ্টিকর্তার সহিত আপনার সম্পর্ককে করে আপনি এই দুনিয়া নিয়ে ততই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন, এমন সম্ভাবনাই বেড়ে। আপনি হয়তে সম্পদের প্রতি অত্যধিক আসক্ত হয়ে পড়বেন। অতঃপর গর্ব করা ও লোক দেখানোর মতো আত্মিক রোগের আবির্ভাব ঘটে। 

পয়সা-কড়ি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনাকে এ ব্যাপারে উন্মাদ হতে হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার জন্য তা লিখে রেখেছেন। তাই অতিরিক্ত কিছু পয়সা কামানোর জন্য আপনার মিথ্যা বলা, ঠকানো, ধোঁকা দেওয়া, জালিয়াতির আশ্রয় নিওয়া এবং অন্যর হক নষ্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। লোভের পরিণতি ভালো নয়। 

আমরা সকলেই ভগ্ন হৃদয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। কিন্ত আমাদেরকে ওই কষ্টের জালে শৃঙ্খলিত হয়ে থাকলে হবে না। অন্যের থেকে আমরা (আমাদের) কষ্টকে আড়ালে করতে পারি, কিন্তু যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর থেকে নয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে আহ্বান ‍করুন, যিনি আমাদের থেকেও আমাদের অন্তরগুলোকে ভালোভাবে অবগত। 

মৃত্যু ছাড়া এই জীবণে কিছুই নিশ্চিত নয়। তাই ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিলম্ব করবেন না। ‍প্রতি রাতে, বিছানায় যাওয়ার আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুন।আগামীকাল চোখ মেলে দেখার জন্য আপনি বাচঁবেন কিনা তা (আপনি কখনিা জানেন না)।

অন্যের সমালোচনা করা বন্ধ করুন

আজ আপনি যত কিছুরই মুখোমুুখী হন না কেন, কেবল সর্বশক্তিমান আল্লাহই তা বুঝাতে  পারবেন। অন্যের কাছে তা ব্যাখ্যা করা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। ধৈর্য ধরুন। এটা অবশ্যই উপকারে আসবে। 

ওই লোকদের ব্যাপারে সতর্ক হন, যারা নিজেদের অহংকার ও আমিত্ব এতটাই আচ্ছন্ন যে, তারা নিজেদেরকে সংশোধন এবং যাদেররকে তারা আঘাত ‍দিয়েছে, তাদের সাথে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করতে বেমালুম ভুলে যায়।

আপনার বন্ধরা যদি আপনাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূর সরায়, তবে তারা আপনার জন্য (উপকারী) নয়। সত্যিকারের বন্ধ আপনার জন্য উভয় জগতের সেরাটা কামনা করে। 

অনলাইন চ্যাটে ব্যস্ত হওয়ার পরিবর্তে আসুন আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরিতে (নিজেদেরকে) ব্যস্ত রাখি। অপচয় করার জন্য এই জীবন বেশ ছোট।

আঘাত ‍দেওয়ার উদ্দেশ্যে পশুপাখিকে নির্যাতন  এবং তাদের সাথে প্রাংক বা সকৌতুক করবেন না। আপনার মতো তারাও সর্বশক্তিমান আল্লাহর সৃষ্টি। তারাও আমাদের থেকে সম্মান ও যেত্ন পাবার অধিকার রাখে। 

অন্যের ব্যাপারে যারা গালগল্প করে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক হন। নিজেদের ব্যাপারে ভালো অনুভব করতে তারা অন্যের দোষক্রটি খুঁজে বেড়ায়। শেষ অবধি তাদের পরিণাম দুর্বিষহ হয়।

বাস্তবতা হচ্ছে: আপনার ব্যবহার আপনার চরিএকে তুলে ধরে। তাই কেউ যদি আপনার কাছে অন্যের সমালোচনা করে, তবে নিশ্চিত থুকুন যে, সে আপনার আড়ালে আপনার ব্যাপারে অন্যের কাছে ‍সমালোচনা করে।

সর্বদা মানুষের কল্যাণ কামনা করুন

লোভের ব্যাপারে সতর্ক হন। এটা আপনাকে শুধু আরও পাবার কামনাতে ব্যস্ত রাখে। আপনি যতই অর্জন করুন না কেন, তা আপনার জন্য যথেষ্ট হবে না। লোভে আপনাকে মন্দ কামনা, হিংসা ও  ‍ঘৃণার পথে চালিত করে। 

এই জীবনে আপনি যদি প্রাচুর্যের আর্শীবাদে ধন্য হন, তবে যাদের এগুলো বেশি প্রয়োজন, তাদেরকে তা দিয়ে দেওয়ার উপায় বের করুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর পরিল্পনাকে উপলব্ধি করুন। তিনি আপনাকে এজন্য আশীর্বাদপুষ্ট করেননি যে, আপনার যা আছে, তা নিয়ে আপনি শুধু বসে থাকবেন। তিনি আপনাকে আনুকূল্য ‍দেখিয়েছেন, যাতে করে আপনি সামনে এগিয়ে ‍যেতে পারেন এবং অন্যের জীবনকে সহজ করার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখতে পারেন। 

অন্যের অমঙ্গল কামনা করবেন না। (কেননা), তা আপনার কাছেই কল্পনাতীত পথে ফিরে আসতে পারে। সর্বদা মানুষের কল্যাণ কামনা করুন। পরিশেষে আপনিই অনুগ্রহমন্ডিত হবেন। ভালো একটি অন্তরের আবাদ করুন। আপনার চিন্তাকে পরিশুদ্ধ করুন। মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন, যারা ভালো কাজ করে। 

অন্যের ওপর অত্যধিক নির্ভর করবেন ন। লোকেরা আপনাকে বারবার হতাশ করবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে শুরু করুন। দেখবেন কিভাবে তিনি আপনার জীবনে এমন মানুষদেরকে নিয়ে আসবেন, যারা আপনাকে সমৃদ্ধ করবে। তাঁর পরিকল্পনার উপর আস্থা রাখুন এবং কিভাবে আপনার জীবনে বদলে যাবে, তা পর্যবেক্ষণ করুন। 

মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ পরম দয়ালু এবং সব সময় ক্ষমা করতে প্রস্তুত। তাই প্রতিবার যখন আপনি পাপ করেন, তখন হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাববেন না। বরং নতুন করে শুরু করা এবং পুনরায় চেষ্টা করাটা আপনার জন্য কেন আবশ্যক, তা ভাবুন। আপনি লক্ষ্যে পৌঁছাবেনই। 

আপনি বিষয়টি যেভাবেই বিবেচনা করুন না কেন, যখন আপনি অন্যের ব্যাপারে মন্দ কথা ‍বলেন, তখন আপনি ব্যর্থদের দলেই শামিল হন। পাপের আলোচনাতে যত সময় ব্যয় করা হয়, তা যদি ভালো কাজে রূপান্তর করা যেতো, যদি ওই একই পরিমাণ সময়কে সর্বশক্তিমান আল্লাহর যিকিরে ব্যয় করা যেতো (তবে কতই না উওম হতো)। 

সত্যবাদিতা আজকের এক দুর্লভ পন্য। কারণ, অধিকংশ মানুষই সত্যকে চায় না। তারা তাদের আরামের জায়গাতেই সুখী। তারা সব ধরনের মিথ্যাকে সহ্য করতে রাজি এবং তা পরিবর্তন করতে তারা কিছুই করে না। মনে রাখবেন, সময় যখন হবে, তখন সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে আমাদের ( সবাইকে) জবাবদিহি করতে হবে। 

 
অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করুন

অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করুন। মনকে নেতিবাচক চিন্তা এবং নিজের ব্যাপারে সন্দেহ দ্বারা পুষ্ঠ করবেন না। নিজেকে যথাযথভাবে ভালোবাসুন এবং জেনে রাখুন, আল্লাহ আপনার জন্য সেরাটাই চান।

আপনার সাফল্যের ছবিগুলো (সামাাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) শেয়ার করার ক্ষেত্রে অত্যাধিক তাড়াহুড়া করবেন না অনেকেই (আপনার সাফল্য)পছন্দ করে না এবং খুব সম্ভবত (এতে) তারা ঈর্ষান্বিত হবে। বিনয়ী হন এবং খ্যাতিকে পরিহার করুন।

শয়তান চায় আপনি যেন সব সময় নিরাশ এবং পরাজয় বোধ করুন। এ ধরনের অনুভুতি বন্ধ করুন। নিজেকে তুলে ধরুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করুন এবং তাঁর পথে হাঁটুন।

জীবনে আপনার যে অবস্থানই থাকুক না কেন, বিনয়ী হন। নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে (উওম অবস্থানে) উন্নীত করেন, আপনার চারপাশের মানুষের নয়।

কারোরই নিখুঁত অতীত নেই। আমারা সবাই পাপ করি। তাই এগুলো যেন আপনার এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর মাঝে (দয়াল হিসেবে) না আসে। তিনি ক্ষমা করতে বসে আছেন। তাই যখন আপনি (ক্ষমা) চান এবং তাঁর ওপর নির্ভর করেন, তখন তিনি তা ভালোবাসেন। তিনিই আমাদের প্রভু। তিনিই আমাদের সৃষ্ঠিকর্তা।

অনুশোচনা করার জন্য বসে থাকবেন না । শয়তানের ওয়াসওয়াসা বা কুমন্ত্রণায় কান  দেবেন না । আপনার নিরবিচ্ছিন্ন পাপকে অনুশোচনার সাগরে পরিনত হতে দেবেন না । এটা বোকামি। কেননা, সর্বশক্তিমান আল্লাহ সর্বদা আপনাকে তাঁর পথে ফিরিয়ে এনে স্বাগতম জানাতে বসে আছেন। আপনাকে কেবল তাঁর সাথে সংযুক্ত হতে হবে। তাঁর কাছে চান। আন্তরিক ভাবে চান। 

মৃত্যু যেকোনো সময় আসতে পারে। আপনি স্বাস্থবান হন বা সম্পদসালী হন,তাতে কিছু যায় আসে না। যখন সময় হবে, তখন আপনাকে চলে যেতে হবে। আপনি  এটাকে না চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন আর না এড়াতে পারবেন।

মানুষ এবং পার্থিব বিষয়াদির সাথে নিজেকে মাএাতিরিক্ত জড়াবেন না। কিছুই স্থায়ী হয় না। এমনকি আমাদের সমস্যা ও দুশ্চিন্তাগুলোও না। আখিরাতের কথা চিন্তা করুন। আপনি শান্তি খুঁজে পাবেন।

যতই পাপ করুন না কেন, পাপবোধ যেন আপনাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত না করে।ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দু’আ করুন। 

আপনার অন্তর যত বেশি ব্যথিত হোক না কেন এবং আপনার আত্মা যতই মনে করুন যে, তা চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে, আল্লাহর ওপর যদি ঈমান থাকে, তবে আপনি টিকে থাকবেন। কিছুই স্থায়ী হয় না। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ, আমাদের অন্তরগুলোকে নরম রাখুন এবং তা-কে কঠিন হওয়া থেকে রক্ষা করুন। আমাদেরকে আপনার রহমত দ্বারা এমনভাবে সিক্ত করুন যে, যখনই আমরা পাপ করি, তখনই যেন আমরা অনুশোচনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি।

আল্লাহর উপর আস্থা রাখুন

প্রায়শই আমরা আমাদের ভাঙ্গা অন্তরগুলো মানুষের কাছে নিয়ে যাই, তাদের কাছে আমাদের সমস্যাগুলো প্রকাশ করি এবং এর দ্বারা আমারা আরও বেশি আঘাত প্রাপ্তিই হই। যিনি অন্তরের শিফা দেন, তাঁর উপরই আস্থা রাখুন।

কখনো কি এমনটি অনুভব করেছেন যে, সবাই আপনাকে শুধু হাতাশ করে? সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে তাঁর উপর নির্ভরশীলতা শিক্ষা দিতেই এ ধরবেন মানুষদেরকে আপনার জীবনে স্থান করে দেন। 

আপনি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যান না কেন, কেহই আপনার প্রকৃত অবস্থা উপলব্ধি করবে না, যতক্ষণ না তাদের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটছে। তাই সর্বজ্ঞ আল্লাহর ওপর নির্ভর করুন। 

আপনার ‍দিন যতই খারাপ যাক না কেন, অন্যের সাথে খরাপ ব্যবহারের কোনো অজুহাত আপনার হাতে নেই। নিজেকে এখনই যাচাই করুন। কেননা, তা ভুল এবং তা বন্ধ করা প্রয়োজন। অন্যের কষ্ট ও দুর্দশার কারণ হবেন না। সর্বদা উওম ব্যক্তি হন আপনি যেভাবে মূল্যায়িত হতে চান, অন্যেকে ঠিক সেভাবে মূল্যায়ন করুন।  

যতই সফল হবেন, ততই আপনার বিনয়ী হওয়া উচিত। বড়ত্ব ফলানোর চেষ্টা করবেন না। কেননা, বড়ত্ব কেবলই আল্লাহরই সাজে। এটা মেনে নেন। আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করুন এবং বিনয় দেখান। (তবেই) আপনি তাঁর নৈকট্য এবং বিশেষ রহমত  হাসিল করবেন। 

জীবনের উদ্দেশ্য সব সময় নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেবেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে কখনো সমীকরণের বাহিরে রাখবেন না এবং  মৃত্যূকে বারবার স্মরণ করুন । তা আপনাকে নম্র  এবং আপনার অন্তরকে কোমল রাখবে এবং আপনাকে দুনিয়াবি বিষয়াদি নিয়ে দুঃখিত না হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। মনে রাখবেন, এই জীবন ক্ষণস্থয়ী এবং(শীঘ্রই) তা শেষ হবে।

সর্বদা সালাত দিয়ে আপনার দিন শুরু করুন। সালাত আপনাকে সঠিক অবস্থানে রাখে  এবং অপ্রত্যাশিত সব বিষয়ে ঘটার ব্যাপারে আপনাকে প্রস্তত থাকতে সত্যিকার অর্থে সাহায্য করে। আবার সালাত দিয়েই দিন শেষ করতে ভুলবেন না। কেননা, কেউই জানে না, আরেকটি দিন সে জাগ্রত হবে কিনা?

মৃত্যুর কথা সব সময় ভাবুন

মৃত্যুর কথা সব সময় ভাবুন; ওই সময়ের কথা (কল্পনা করুন), যখন আপনি কবরে একলা থাকবেন, সাথে থাকবে শুধু আপনার কর্ম। যদি আরও কিছু আমল করতে পারতেন, তা ভাবার জন্য (কবরের ওই সময়টি) বেশ বিলম্বের। 

যতই প্রস্তুত থাকুন না কেন, কোনো নোটিশ ছাড়াই মৃত্যু্ আসবে। কবরে নিজের কর্মের সাথে আটকা পড়ার আগেই ভালো করে প্রতিটি দিন উদযাপন করুন। 

যখন জানেন, আপনি কাউকে আঘাত দিয়েছেন, তবে ভুলে সংশোধনে তৎপর হন। আপনার ‍দেওয়া কষ্টের কারনে তারা কান্না করতে পারে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে অভিযোগ জানাতে পারে। 

আপনার ঈমানকে নাড়া দেওয়ার মতো কিছু ঘটেছে বলেতার মানে এই নয় যে, তা আপনার ঈমানকে ভেঙ্গে দেবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে পর্যবেক্ষণ করছেন। তােই (ঈমান নিয়ে) সামনে এগুতে থাকুন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজের সমস্যার কথা বলার ক্ষেতে কখনে ক্লান্ত হবেন না। তিনি তওবধায়ন করেন, তিনি শোনেন, তিনি বোঝেন এবংকিছু মানুষ যেভাবে আপনার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দেয়, তিনি আপনার সাথে তেমনটি কখনো করেন না। 

দায়িত্ব জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের বিদ্বেষী কথা দ্বারা আপনার অন্তর ক্ষতবিক্ষত হতে পারে। আপনি কষ্টে আছেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর কালাম তথা কুরআন দ্বারা নিজের (আত্মাকে) আয়েশ ও স্বস্তি দেন।

অন্যকে তুচ্ছ মনে করবেন না

অন্যকে তুচ্ছ করবেন না বা আঘাত দেবেন না। আজ আপনাকে ক্ষমতাবান মনে হচ্ছে, কিন্তু পরিস্থিতি চোখের নিমেষেই বদলে যেতে পারে। উপলব্ধি করুন এবং বিনয়ী থাকুন। আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন।

সর্বশক্তিমন আল্লাহ, আপনি আমাদের সব-ই জানেন: আমাদের দুর্বলতা, আমাদের প্রয়োজন। আমরা শুধু আপনার কাছেই সাহায্য পরীক্ষার মুখোমুখি হই, তখন আমাদের তা মোকাবিলার সুন্দর র্ধৈর্য
 দিয়ে সাহায্য করুন। 

আগামীকাল, আগামী মাস, আগামী বছরে কি ঘটবে, তা নিয়ে আমরা  দুশ্চিন্তা করি। এমন কখনোই বন্ধ হবে না। এই মুহূর্ত , যা সবত্র বর্তমান, তার ওপর মনোযোগ নিবন্ধন করুন। আল্লাহর নিকটবর্তী হতে কাজ করুন।

আপনি রাস্তার  একেবারে শেষ মাথার পৌছে গেছেন এবং আপনি হাল ছেড়ে দিতে চান, যদি তেমনটি বোধ করেন, তবে শতবার ব্যর্থ হওয়ার কথা এবং শত ব্যর্থতা সত্তেও আল্লাহর রহমত অব্যাহত থাকার বিষয়টি স্মরণ করুন।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ, আমাদের পাপ অসংখ্য, কিন্তু আপনার রহমত সীমাহীন। আমাদের ক্ষমা করুন। যে ‍দিনটি সর্বাপেক্ষা মুখ্য, সেই শেষ বিচারের দিনে আমাদেরকে অপমানিত করবেন না। আপনার ছায়াই আমাদের প্রয়োজন।

সবাইকে খুশি করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করি, তথাপি কিছু লোক এটাকে যথেষ্ট মনে করবে না । তাই (মানুষকে বাদ দিয়ে) সর্বশক্তিমান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করুন। 

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.