ধৈর্য্য নিয়ে জনপ্রিয় উক্তি পর্ব- ৫

ধৈর্য্য নিয়ে জনপ্রিয় উক্তি 

যার বেশি আছে, তার সাথে নিজেকে তুলনা করবেন না। চলার জন্য তা বেশ বিপজ্জনক পথ। (এতে করে) আপনি তিক্ত স্বভাবের মানুষে পরিণত হবেন। আল্লাহ আমাদেরকে নানাভাবে আশীর্বাদে ধন্য করেন। তাই তাঁকে ধন্যবাদ দেন। 


কখনো আপনি রাগাম্বিত হবেন, আবার কখনো দুঃখিত হবেন। এভাবেই জীবন চলে। এসব অনুভূতি যেন আপনাকে বশীভূত না করে। নিজের মনোযোগকে সযত্নে লালন করুন। 


জীবনে আপনি যত ওপরে উঠবেন, তত বেশি লোক আপনার সমালোচনা করবে। এমনকি আপনার সেরা সময়েও আপওি জানানোর ইস্যু লোকদের হাতে থাকবেই। তাদেরকে উপেক্ষা করুন। 


জীবনে যাই ঘটুক না কেন, ভালো একটি অন্তর রাখুন। এমন এক অন্তর, যাতে ধৈর্য ও  আস্থা বিরাজ করে। আপনার অন্তরকে কঠিন করার সুযোগ এই দুনিয়ার  অন্ধকারকে দেবেন না। 


আপনি ক্লান্ত, চরমভাবে বিরক্ত এবং আপনি ভেঙ্গ পড়ার নিকট বিন্দতে পৌঁছে গেছেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা জানেন। এরপরেও যখন আপনি দুর্বলতা বোধ করেন, তখন আল্লাহ আপনার অভ্যন্তরে শক্তি ও ভেঙ্গ দিয়ে থাকেন। তাই সামনে এগিয়ে চলুন। 


কিছুই স্থায়ী হয় না। আপনার দুঃখ বিদায় নেবে, আপনার যৌবন আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে। আপনার কষ্ট দূরীভূত হবে। তাই চূড়ান্ত গন্তব্যে পেীঁছানোর জন্য এগুতে থাকুন। 


যতটা কষ্ট ‍আপনি ভোগ করেছেন এবং যতই রাত আপনি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, তা সম্পর্কে সর্বশক্তিমান আল্লাহ অবগত নন, আপনি কি এমনটি মনে করেন? আপনি কি মনে করেন, এগুলোর কিছুই (আল্লাহর ) নজরে আসবে না এবং এগুলো প্রতিদানহীন হয়ে পড়ে থাকবে? মনে রাখবেন, ধৈর্যের মাধ্যমে আপনি যতগুলো পরীক্ষা উতরে যান, তা-র প্রতিটিই আপনার ভালো আখিরাতের জন্য এক একটি টিকিট-স্বরূপ। 


মাঝে মাঝে সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে কটিন সময়ে ফেলেন। কেননা, তিনি জানেন কখন আপনি আপনার দুর্বলতম (মানসিক) পর্যায়ে অবস্থান করেন এবং কখন আপনি এটা অবগত হয়ে স্বস্তির জন্য আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করবেন যে, শুধু তিনিই পারেন আপনার অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে। তিনি আপনার জন্য যে ফয়সালা করে রেখেছেন, তা-র ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করুন। পরিস্থিতি যখন ভালোর দিকে এগুতে থাকে, তখন (আল্লাহর প্রতি) কৃতজ্ঞ হন। 


মাঝে মাঝে নিরাশ হওয়াটাই মানুষর স্বাভাবিক প্রকৃতি। যখন তেমনটি ঘটে, তখন করণীয় সর্বাপেক্ষা উওম জিনিস হচ্ছে: আপনি যে পরিস্থিতিতে আছেন, সেখান থেকে কয়েক কদম পিছিয়ে আসা এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহতে নির্ভর করা এবং নিজেকে তাঁর নিকট সোপর্দ করা। 


ক্রোধকে যদি দমন না করা হয়, তবে তা (ওই ব্যাক্তির) নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং তাকে গ্রাস করে; পরিশেষে ওই ব্যাক্তিকে ধ্বংস করে দেয়। এমন মানুষের কথা আমরা ক’বার শুনেছি বা দেখেছি, যে কিনা একটি হটকারী কাজ বা চরম রাগের মাথায় দেওয়া কোনো বক্তব্যেব কারণে নিজের জীবন ধ্বংস করেছে? তাই এমন কোনো কথা মুখ দিয়ে বের করা বা এমন কিছু করার আগে সতর্ক হন, যা (আপনার জন্য) চরম আক্ষেপের কারণ হতে পারে।

বিপদের বন্ধু ধৈর্য 

কারো সাথে ভিন্নমত পোষণের সময়ও ভালো শব্দ চয়ন করুন। আপনি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত নন, শুধুমাএ এই কারণে আপনার রূঢ় বা দুঃখিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। 


মাঝে মাঝে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু নতি স্বীকার করাটা বেছে নেওয়ার মতো কিছু নয়। সামনে এগিয়ে চলুন। মনোযোগকে (লক্ষ্যে) স্থির রাখুন। প্রতিটি জিনিসের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে সর্বশক্তিমান আল্লাহ অবগত। 


পরিস্থিতি কঠিন বলে হাল ছাড়াবেন না, আর জীবন সন্তোষজনক নয় বলে নতি স্বীকার করবেন না। প্রতিবন্ধকতা সামনে এগিয়ে চলুৃন। সর্বশক্তিমান আল্লাহর আপনাকে এসবের মধ্য দিয়েই উতরে আনবেন। 


চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়া থেকে নিজের হেফাজত করুন। সবকিছু ঠিক এই মুহূর্তে হতে, এ আশা ত্যাগ করুন। সবকিছু আল্লাহর উপযুক্ত সময়মাফিক হবে, তা বিশ্বাস করুন।


আপনি ওঠে দাঁড়াবেন। আপনি ব্যর্থ হবেন। আপনি আবার ওঠে দাঁড়াবেন। জীবনের চ্যালেঞ্জ এমনই। এই দুনিয়াতে কিছুই চিরস্থায়ী হয় না। চিরস্থায়ীত্ব কেবল  আখিরাতেই বিরাজমান। 


আপনার কষ্ট যেন আপনাকে পাষাণ না। অন্য মানুষ কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা কেউই জানে না। এই দুনিয়াতে ইতোমধ্যেই অনেক দুঃখ-কষ্ট বিরাজ করছে। 


ক্রোধ যেন আপনার নিয়ন্ত্রণ না নেয় এবং ঘৃণা যেন আপনার অন্তরে বংশ বিস্তারের সুযোগ না পায়। নেতিবাচক অনুভুতি যেন আপনার নিয়ন্ত্রক না হয়। অন্তরকে (সর্বদা) সঠিক দিকে চালিত রাখুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে আপনার জীবনের কেন্দ্রে রাখুন, তবেই আপনি এমন এক জীবন অতিবাহিত করবেন, যা অনুরাগ ও উদ্দেশ্য-সমৃদ্ধ। 


দুশ্চিন্তা করে নিজের সময় নষ্ট করবেন না, বিশেষ করে ওইসব জিনিসের ব্যাপারে, যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। দুশ্চিন্তা যেন আপনার আনন্দ কেড়ে না নেয়। বরং সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে যা কিছু দিয়েছেন, তা-র জন্য তাঁকে ধনবাদ দিতে (আল্লাহ প্রদও ওই) অনুগ্রহগুলোকে ব্যবহার বরুন। সকল বিষয়ের নিয়ন্ত্রণকারী আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। 


যিনি নীরব থাকেন, তাকে তুচ্ছ ভাববেন না। (কখনো কখনো) নীরবতা আওয়াজের চেয়েও বলিষ্ঠ হতে পারে। যখন আপনার থেকে এই আশা করা হয় যে, যেভাবে আপনার সাথে কথা বলা হয়েছে, আপনিও ঠিক সেভাবে জবাব দেবেন, তখন নীরবতা অবলম্বনের জন্য যথেষ্ট পরিপক্কতা, চেষ্টা ও বুদ্ধিমওার প্রয়োজন হয়। 


অন্যরা আপনার গিবত বা পশ্চাতে নিন্দা করুক এবং আপনার ব্যাপার গুজব ছড়াক। এ ব্যাপারে আপনি খুব একটা কিছু করতে সক্ষম নন। কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন এই কারণে যে, তারা তাদের পুণ্যগুলো আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে। (অন্যদিকে আপনি এটা) জেনে স্বাচ্ছন্দ বোধ করুন যে, এর জন্য আপনি পুরস্কৃত হবেন। 


আপনার কষ্টের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পেছনে একটা উদ্দেশ্য রয়েছে; (আর সে ‍উদ্দেশ্য হচ্ছে) হারিয়ে ফেলার অনুভুতি থেকে নিজের খুঁজে পাওয়া, হতাশা থেকে আস্থা ফিরে পাওয়া এবং ব্যর্থতা থেকে পুনরায় ওঠে দাঁড়ানো। এটাই আল্লাহর পরিকল্পনা। 


আপনার ভোগ ও সহ্য করা কষ্ট আপনাকে আরও দয়ালু, কোমল ও সহানুভূতিশীল ব্যক্তিতে পরিণত করা উচিত। কঠিন ও রূঢ় ব্যক্তিতে পরিণত হওয়াটা আপনার জন্য উচিত হবে না। 


মানুষ যদি রূপ ও কর্কশ হওয়াটা বেছে নেয়, তাহলে শুধু হাসি দেন এবং নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকুন। পাল্টা আঘাত হানবেন না। (কেননা), তা তাদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে, আপনার ওপর নয়। তাই নিজের (মানসিক) শান্তি বাজায় রাখুন। 


যেকানো মূল্যে আপনার অন্তরকে রক্ষা করুন। অন্তরে নেতিবাচক ও জঘন্য লোকদেরকে অনুপ্রবেশের সুযোগ দেবেন না। আপনার আন্তর থেকেই সবকিছুর আগমন ঘটে। তাই অন্তর হারিয়েছেন তো সব হারিয়েছেন।


আমরা হয়েতো ব্যর্থতা ও পরাজয়কে প্রত্যাখ্যান ভাবতে পারি। প্রকৃতপক্ষে, তা সর্বশক্তিমান আল্লাহর সুরক্ষা বেষ্টনী। আমাদের সীমাবদ্ধ মেধা তা উপলব্ধি করতে পারে না। কোনো এক সময় তা বোধগম্য হবে। 


যাদেরকে পাশে পারেন বলে ভেবেছিলেন, তাদেরকে পাশে পাননি বলে হতাশ হবেন না। কারা আপনার জীবনে অন্তর্ভুক্ত, তা সর্বশক্তিমান আল্লাহ জানেন। আপনাকে আল্লাহর পরিকল্পনার ওপর আস্থা রাখতে হবে।


নীরব ব্যক্তি দুর্বল নন। বাস্তবিকপক্ষে তিনি শক্তিশালী আমাদের সকলের মতো তারও চেষ্টা ও সংগ্রাম রয়েছে, কিন্তু তিনি এগুলোর দ্বারা অন্যের উপর চাপ সৃষ্টি না করাকেই বেছে নিয়েছেন। 


নিজের জিহ্বার ব্যাপারে সাবধান হন। আপনার বলা রূঢ় শব্দ হয়তো অন্যকে আজীবনের জন্য আহত করবে। ভাঙ্গ হাড়কে আপনি হয়তো জোড়া লাগাতে পারেন, কিন্তু ভাঙ্গা মন জোড়া লাগানো এত সহজ নয়। 


সবকিছু আপনার অভিপ্রায় অনুসারে চলবে, তেমনটি আশা করবেন না। এগুলো সেভাবে চলবে না। আপনি যা চেয়েছেন, তা যদি আল্লাহ পিছিয়ে দেন, তবে তা আপনার ঈমান ও ধৈর্যের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। 



ছোট ছোট কাজগুলোকে মূল্যায়ন করুন; ভালোবাসা অনুভব করুন এবংআপনার আশেপাশের জিনিসগুলোর তারিফ করুন। যে জিনিস আপনাকে কষ্ট দেয়, তা প্রত্যিাখ্যান ও উপেক্ষা করতে শিখুন।


যখন আপনি পরীক্ষার সম্মুখীন, তখন শান্ত ও অবিচল থাকতে শিখুন। সংযম ও যুক্তির অনুশীলন করুন। অন্যরা কি বলে, তা যেন আপনার প্রতিক্রিয়ার ওপর কর্তাত্ব ফলাতে না পারে। মনে রাখবেন, কিছুই স্থায়ী নয়। 



আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা অধৈর্য হয়ে পড়ি। আমরা সর্বদা উওম পেতে চাই এবং চাই সবকিছু যেন এখনই বোধগম্য হয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সর্বজ্ঞ, তাঁর ওপর আস্থা রাখুন। 


নিজের প্রতি ধৈর্যশীল ও দয়ালু হন। আমরা সকলেই আঘাতপ্রাপ্ত এবং আমাদের সবার সাথেই বাজে জিনিস ঘটেছে। তারপরেও আমরা নিজেদেরকে (বিরূপ পরিস্থিতি থেকে) তুলে ধরি এবং সামনে এগুতে থাকি। 


বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে শিখুন। বিতর্ক আপনার উদ্যমকে চুষে নেয় এবং আপনার আত্মিক প্রশান্তিকে হরণ করে। বিতর্কে না জড়ানোর জন্য একজন পরিপক্ক মানুষ হতে হয়। 


যদি কাউকে অপছন্দ করেন, তবে (তার থেকে) দূরে থাকুন। তাকে আঘাত করবেন না। তার প্রতি অভদ্র, অমার্জিত ও অশ্রদ্ধাশীল হবেন না। বস্তুত তা দুর্বল ঈমানের আলামত। 


কে সঠিক, তা নিয়ে অত্যধিক উদ্বিগ্ন  হওয়ার কিছু নেই। বরং কোন জিনিস সঠিক, তা-ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কম তর্ক করুন, নিজের জিহ্বাকে সংযম রাখুন। শান্ত থাকুন। তবেই আপনি অনুগ্রহে ধন্য হবেন। 


সময় যখন প্রতিকূল, বস্তুত তখনই আপনার চরিএ বিকশিত হয়। যখন আপনি পরীক্ষা ও দুর্ভোগের মুখোমুখি হন, তখনই আপনার আত্মা বলীয়ান হয়। তাই সামনে এদিয়ে চলুন।


আপনি যথই ভালো মানুষ হন না কেন, কেউ না কেউ আপনাকে ঘৃণা করবে। হতাশ হবেন না। হিংসার বশবর্তী হয়ে লোকেরা নিজেদের নাটক রচনা কবে। তাদেরকে উপক্ষো করুন।


আপনার সমালোচকদেরকে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করে সময় নষ্ট করবেন না। তারা কখনোই সন্তুষ্ট হবে না এবং সমালোচনার জন্য তারা কিছু না কিছু সব সময়ই তাদের হাতে থাকবে। তাই অন্যের কথা না ভেবে নিজের কাজে মনোনিবেশ করুন। 


প্রতিবন্ধকতা, বাখা কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা সত্ত্বেও সটিক কাজ করতে থাকুন। একদিন সর্বশক্তিমান আল্লাহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটাকে একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত করে দেবেন, তখন সবকিছুই বোধগম্য হবে। 


খারাপ যা ঘটেছে, তা (স্মৃতিপটে) বারবার জাগরুক করবেন না। প্রতিটি অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেন। আপনার চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক চিন্তায় বদলে দেন, (তবেই) তা আপনার জীবনকে বদলে দেবে। 


যদি বুঝতে না পারেন, তবে চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। যদি বোধগম্য ‍না হয়, তাতেও চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। এটা কষ্টদায়ক হতে পারে। কিন্তু আল্লাহ যা করছেন, তা তিনিই ভালো জানেন। তাই শুধু তাঁর ওপর ভরসা করুন। 


খারাপ একটি দিন পার করেছেন বলে, তা আপনাকে অন্যের প্রতি রূঢ় বা আরও খারাপ হওয়া বা তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার অধিকার দেয় না। পরিপক্ক হন, এসবে ঊর্ধ্বে উঠুন। 


যখন আপনি সংগ্রমের মধ্য দিয়ে যান, তখন কৃতজ্ঞ হওয়া এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দেওয়া বেশ কঠিন। তথাপি আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন, তিনি আপনাকে আরও বলীয়ান করে তুলবেন।


সর্বশক্তিমান আল্লাহ যখন আপনাকে পরীক্ষা করেন, তখন তিনি এটা যাচাই করেন যে, আপনি আপনারা অন্তরে ঈমানকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম কিনা। ধৈর্যশীল হন। বিশ্বাস হারাবেন না। স্বস্তি আসবেই। 


কোনোকিছু যদি আপনার জন্য হয়ে থাকি, তবে তা কেউই প্রতিহত করতে পারবে না। আপনি যাকে বিবাহ করতে চান, (আপনার কাঙ্ক্ষিত) সেই চাকুরি ও পদোন্নতি আসবেই, যদি সেগুলো আপনার হয়ে থাকে। ধৈর্য করুন। 


মাঝে মাঝে যখন আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর নির্ধারিত সময়সূচির ব্যাপারে নিরাশ হয়ে পড়ি, তখন এই নিরাশাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্রতে পরিণত হয়। আমরা ভুলে যাই, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে তিনিই এসব প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করেন। 


অতীত অভিজ্ঞতা ও ভুল থেকে শিখুন। কোনো উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ সেগুলোকে পাঠিয়েছেন। যদি একই পরিস্থিতির পুনরাবৃওি ঘটে, তবে (পূর্বেব) শেখা শিক্ষার দ্বারস্থ হন। 

যাই ঘটুক না কেন ধৈর্য ধারন করুন

যাই ঘটুক না কেন, সামনে এগিয়ে চলুন। উত্থান ও পতন, প্রেম ও ঘৃণা , ভালো ও মন্দ; এগুলো আসে এবং যায়। এটাই আমাদের (জীবনের) যাএা। আমরা গন্তব্যে পৌঁছাবোই। 


অন্তরে ক্রোধকে অনুপ্রবেশ করতে দেবেন না। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, এর মানে হচ্ছে: ক্ষমতা জাহিরের মাধ্যমে নিজেকে অন্যের চেয়ে ‍উচ্চতর প্রমাণ করা। আদতে তা আপনাকে বিনাশ করবে।


অন্যের জন্য সুখী হলে তা আপনার সুখকে কেড়ে নেবে না। আপনার থেকে যখন কারো বেশি থাকে, তখন তার মানে এই নয় যে, তারা আপনার জন্য বরাদ্দকৃত অনুগ্রহে ভাগ বসাচ্ছে। যা আপনার তা আপনারই থাকবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা নিশ্চিত করবেন। তই অন্যের জন্য সর্বদা সেরাটাই প্রত্যাশা করুন। 


যখন কেউ আমাদের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে বা আমাদের জীবনকে কোনো না কোনোভাবে কঠিন করে তোলে, তখন মনে রাখবেন যে, প্রায়শই তাদের এমন আচরণের কারণ আমাদের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং তাদের এমন আচরণের আসল করণ হয়তো তাদের কষ্ট বা তাদের সংগ্রাম বা তারা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেসবের সাথে সম্পর্ক রাখে। তাই তাদেরকে সন্দেহের সুবিধাটুকু দেন। 


প্রিয়জন হারানোতে যে শূন্যতা, বিরহ ও কষ্ট অনুভূত হয়, তা শুধু সর্বশক্তিমান আল্লাহই জানেন। এজন্য এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণের প্রতিদান স্বয়ং আল্লাহ নিজের কাছে রেখেছেন। তিনি ছাড়া এগুলো কেউই উপলদ্ধি করবে না। তাই ধৈর্য ধারণ করুন। 


মানুষ হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই আমরা কিছু বিষয়ে অপরের সাথে দ্বিমত করবো, কখনো তা বেশ শক্ত দ্বিমত। কিন্তু এই দ্বিমত আমাদের কাউকে খরাপ বা মন্দ বানায় না। নিজেদের মতপার্থক্যকে সম্মান জানানোর রীতি আমাদেরকে শিখতে হবে। আমাদের প্রত্যেকেই তার নিজস্ব মত গঠনের ব্যাপারে সমান অধিকার রাখে।


আপনার হতাশা যেন আপনার জীবনকে দুর্বিষহ না করে। জীবনে এর চেয়েও বেশি কিছু রয়েছে। আপনার আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি কতটা পরিপক্ক, এটা তা তুলে ধারবে।


অন্যের সমালোচনা এবং তাদের ওপর বিশেষ কোনো লেবেল বা তকমা লাগানোর আগে তাদের কষ্ট ও অশান্তি উপলদ্ধি করতে অন্তত একটি মিনিট হলেও সময় নেন (এবং ভাবুন) ওই একই ধরনের পরিস্থিতিতে আপনি কি ধরনের আচরণ করতেন? 


আপনি যে পরিস্থিতিরই মুখোমুখি হন না কেন, মনে রাখবেন কেউ না কেউ এর চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে, যাচ্ছে। আপনার যে সমস্যা রয়েছে, তার ব্যাপারে ধৈর্যশীল হন এবং আপনার যা নেই, তার জন্য কৃতজ্ঞ হন। 


জীবন আপনার দিকে যাই নিক্ষেপ করুক না কেন, আপনি সদয় এবং সহানুভূতিপরায়ণ থাকুন। কখনো রাগাম্বিত বা রূঢ় হবেন না। এটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু তা আপনাকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তুলবে। 


আপনি হয়তো ভাবছেন, অনেকের থেকেই আপনি বেশি দুঃখ ও কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আপনি যদি ঈমানে দৃঢ় থাকেন, তবে সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে পথ দেখাবেনই, যে পথটি আপনি (এখন) দেখছেন না। 


যখন আপনার প্রতি কেউ ‍রূপ হয়, তখন হাসুন এবং পাল্টা আঘাত না করার পথটি বেছে নেন। নৈতিকভাবে উঁচু পর্যায়ে অবস্থান করুন। শান্ত থাকুন। এমনটি করে তাদের শক্তি ছিনিয়ে নেন। 


শক্ত হন এবং ইতিবাচক মনোবল রাখুন। কিছুই আল্লাহর জন্য কঠিন নয়। প্রতিটি যুদ্ধের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে (পর্যাপ্ত) শক্তি দিয়ে ইতোমধ্যেই সজ্জিত করছেন। 


নিজেকে সুখী করতে কখনো অন্যের ওপর নির্ভর করবেন না। ইতিবাচক হন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার পক্ষে আছেন। নিজের মানসিকতার যত্ন নেন। তিনি আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবেন। 


দুশ্চিন্তা জীবনেরই একটি অংশ। মানুষ হিসাবে আমাদের এ ধরনের চিন্তা থাকা স্বাভাবিক। প্রকৃতপক্ষে আমাদেরকে কাবু করার সুযোগ এগুলোকে না দেওয়াটাই সর্বাপেক্ষা মুখ্য। 


অভিযোগ জানানো আগে আমরা যেন এটা ভুলে না যাই যে, এই দুনিয়াতে অনেকের থেকেই আমরা অপেক্ষাকৃত স্বাচ্ছল। তাদের (সংগ্রামের) তুলনায় আমাদের সংগ্রাম নিতান্তই তুচ্ছ। তাই সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন। 


আবেগপ্রবণ অবস্থায় অন্যের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। কেননা, তারা যা বলেছে, আপনি হয়তো তা ভুল বুঝেছেন। এটা করতে একজন শাস্ত ও বিচক্ষণ মনের প্রয়োজন হয়। 


ব্যর্থতা যেন আপনাকে বিফল না করে। ব্যর্থতা আপনাকে এটা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর পরিকল্পনা সব সময়ই জয় লাভ করে। তিনি আপনার কাছে আলামত পাঠাবেন এবং আপনাকে পুনর্নির্দেশনা দেবেন। 


যখন কেউ রূঢ় ও নিষ্ঠুর শব্দ ব্যবহার করে, তখন পাল্টা আঘাত হানবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, যেন তিনি আপনাকে সম্ভাব্য সর্বাপেক্ষা উওম উপায়ে জবাব দেওয়ার শক্তি দান করেন। 


কঠিন সময়কে ধৈর্যর সাথে মোকাবিলা করুন। কঠিন সময়গুলোতেই আমরা কিছু না কিছু অর্জন করি। হয়তো আমরা তা অপছন্দ করি, কিন্তু আমরা তখন অভিজ্ঞতা ও সহিঞ্চুতা অর্জন করি। (বস্তুত) এগুলো আমাদের চরিএকে সমুদ্ধ করে। 


জীবনে আমরা যে পরীক্ষারই মুখোমুখি হই না কেন, কখনোই ধৈর্য ও প্রার্থনার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দেবেন না। এই দুটো সর্বোওম প্রতিষেধক। তাই অবিচল থাকুন। মহান আল্লাহ (সবকিছুই) দেখছেন। 


যেভাবে চান, পরিস্থিতি যখন সেভাবে চলে না, তখনই আপনার চরিত্রের সত্যিকারের পরীক্ষা হয়। তখনও কি আপনি দয়ালু, যত্নবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তি থাকবেন? 


আপনি যদি আল্লাহর আশীর্বাদ ভোগ করেন, তবে আপনি তাঁর পরীক্ষাগুলোকেও মেনে নেবেন। বিষয়টি এমনই। যখন আপনি পরীক্ষাগুলোর কথা (একবার) ভাবুন।


নীরবতাকে অনেকেই দুর্বলতা ভাবে। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। বস্তুত নীরবতা এক আত্মিক শক্তি। এটা আমাদেরকে শুনতে শেখায় এবং আমাদেরকে এটা বলে দেয় যে, কখনো কখনো নীরবতাই উওম।


সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের অশ্রুগুলো দেখেন এবং সর্বদা আমাদের প্রার্থনা শুনেন। সর্বোচ্চ ধৈর্যের সাথে এই দুনিয়ার পরীক্ষাগুলো মোকাবিলার শক্তিতে তিনি যেন আমাদেরকে বলীয়ান করেন, এই দু’আ করুন। 


জীবনে এমন লোক সব সময়ই থাকবে, যারা আপনাকে নিচে নামতে চাইবে। তাদেরকে সে সুযোগ দেবেন না। আপনার আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখুন। মনোযোগ নিবদ্ধ করুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সবকিছুই জানেন।


আপনি কতটা পরিপক্ক, বয়সের সাথে তার সম্পর্ক খুবই কম। বস্তুত পরিপক্কতা আপনার আত্মার শক্তি। যত সহ্য করবেন, ততই আপনি শক্তিমান ও পরিপক্ক হয়ে উঠাবেন।


দুশ্চিন্তার কাছে পরাজয় মেনে নেবেন না। দুশ্চিন্তা আপনার সবকিছু কেড়ে নিয়ে আপনাকে নিঃস্ব প্রাণহীন করে ছাড়বে। তাই যাই ঘটুক না কেন, আত্মিক শন্তিকে ধরে রাখুন।


বিক্ষুদ্ধ, রাগাম্বিত হওয়া , তিক্ততা ও তীব্র ঘৃণায় টুইটম্বুর হয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই দুনিয়া বেশ ছোট। প্রতিটি নতুন দিন-ই সর্বশক্তিমান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি উপহার। তাই এই জীবনকে ভালোভাবে যাপন করুন। 


কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনি জানেন না কতটা সময় আপনি হাল ধরে থাকতে পারবেন। মনে রাখবেন, খারাপ সময় চিরস্থায়ী হয় না। ধৈর্যকে উজ্জীবিত রাখুন।


আপনি যে ধরনের দুঃখ-কষ্টে মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, মাঝে মাঝে তা অসহনীয় লাগে এবং এটা অনুভব করতে থাকেন যে, না। কিছুই চিরস্থায়ী হয়। 


চারিপাশের কোলাহলকে উপক্ষো ও অগ্রাহ্য করতে শিখুন। অন্তরকে শান্তিতে রাখুন। যদি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চান, তবে আত্ম-সংযম এবং নিয়মানুবর্তিতার (রীতি) গড়ে তুলুন। 


ধৈর্যর বিকাশ ঘটান। নিরাশ হওয়াটা  আপনাকে আপনার লক্ষ্য অর্জনে এক ধাপ এগিয়ে দেবে না। প্রতিটি জিনিসেরই তার উপযুক্ত সময় রয়েছে। প্রতিটি বিলাম্বেরই রয়েছে তার নিজস্ব অনুগ্রহ।


আপনি যা চান, যখন তা পান না এবং যখন আল্লাহর ওপর আস্থা রাখা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে, ঠিক তখনই আপনার প্রয়োজন সর্বোচ্চ পরিমাণ ধৈর্য ধারণ করা। যদি তা করেন, তবে আল্লাহ আপনাকে অশেষ পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন।


জয় লাভ থেকে আপনার শক্তি আসে না। বরং আপনার চেষ্টা-সংগ্রাম ও কষ্ট থেকেই এটি অর্জিত হয়। এজন্য আল্লাহ আপনাকে যত বেশি ভালোবাসেন, তিনি আপনাকে ততই পরীক্ষায় ফেলেন। 


বাধা-প্রতিবন্ধকতা থেকে পালিয়ে বেড়াবেন না। কোনো একটি উদ্দেশ্যে আল্লাহ এগুলোকে আপনার পথে স্থাপন করেছেন। তাই গোলাপকে আলিঙ্গন করুন, সেইসাথে তার কাঁটাকেও। আর এভাবেই আপনি বেড়ে ওঠেন।

নিরাশ হবেন না ধৈর্য ধারণ করুন 

যখন আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ফল দেখতে পান না। তখন নিরাশা হওয়াটা স্বাভাবিক। একবারে একটি পদক্ষেপ নেন। দিনের কাজ দিনে শেষ করুন। আপনি লক্ষ্যে পৌঁছাবেনই।


সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার জন্য সবই পরিকল্পনা করে রেখেছেন। কবে ও কখন তা বাস্তবায়িত হবে, সে ব্যাপারে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করুন। আল্লাহ তা নিশ্চিত করবেনই।


কখনো কখনো অবসাদ ও চরম ক্লান্তি অনুভব করাটাই স্বাভাবিক। উচ্চতর অবস্থানে আরোহণের জন্য আমাদের সবারই একটুখানি সাহায্যের প্রয়োজন। ওই শক্তি অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন।


কঠিন মুহূর্তে আপনি কি চিন্তা করেন, তা আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। হাল ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে আপনি যদি ঈমানসুলভ আচরণকে বেছে নেন, তবে তা পার্থক্য তৈরি করে দিতে পাবে। 


জীবনে যাই ঘটে, তা ভালোর জন্যই ঘটে। আপনি আপনার চাকরি হারাতে পারেন বা নতুুন আরেকটি পেতে পারেন। তা যাই হোক না কেন, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করুন।


আপনি ভাবছেন আল্লাহ সবকিছু বিলম্ব করছেন। কি ঘটছে, তা তিনিই (ভালো) জানেন। নিরুদ্দম হবেন না। আশাহত হবেন না। অধ্যবসায়ী হন। (প্রতিনিয়ত) দু’আ করুন।


যারা সত্যিকারের ধৈর্য প্রদর্শন করে, তারাই সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয়। হাল ছেড়ে দেওয়া তাদের শব্দভাণ্ডারে নেই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তারা সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা চালায়।


আমরা সবাই জান্নাতে যেতে চাই। তথাপি যখন আমরা পরীক্ষার সম্মুখীন হই, তখন অভিযোগ করি।(এমনটি না করে) নতুন এক পন্থা অবলম্বন করুন। জেনে রাখুন, ভালো যেকোনো জিনিস সহজে আসে না। ধৈর্যর সাথে (আল্লাহর দেওয়া) পরীক্ষার মোকাবিলা করুন।


 যতক্ষণ আমরা জীবিত, ততক্ষণ আমরা আঘাতপ্রাপ্ত হবো; সমালোচিত ও অপমানিত হবো, এটাই ধরে রাখুতে হবে। দৃঢ়তার সাথে দণ্ডায়মান হন এবং ধৈর্য ধারণ করুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে (আপনার) বিষয়াদি তত্ত্ববধান করতে দেন।


কোনো ঝড় যেন আপনাকে পিছু না হাটায়। বরং এই ঝড় যেন আপনাকে সম্মুখে চালিত কবে এবং আরও শক্ত করে। একজন মুমিন (ব্যক্তি সর্বদা) এমনটি-ই করে। ঈমানে সর্বদা অবিচল থাকুন। 


প্রতিটি দিন নিত্য-নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। আসুন প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করি আরও ভালো হতে, আরও ধৈর্যশীল এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তার ব্যাপারে আরও সচেতন হতে। স্বস্তি আসবেই।


আপনি কি জীবনের চাপ ও অনিশ্চয়তা দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন? আপনাকে পরাস্ত করার  সুযোগ এগুলোকে দেবেন না। কেননা, সর্বশক্তিমান আল্লাহই সবকিছুর পর্ণ নিয়ন্ত্রক।


নিরাশ হবেন না। বরং সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং নিজের ব্যাপারে ধৈর্যশীল হন। কিন্তু তাড়াহুড়া করে এমনটি করতে যাবেন না। আমরা প্রায়শই এই প্রত্যাশা করি যে, আল্লাহর সময়সূচি আমাদের সময়সূচি মতোই হবে। কিন্তু বাস্তবতা কদাচিৎ এভাবে কাজ করে। আমরা তাড়াহুড়ার মধ্যে থাকি। আল্লাহ নন। স্মরণ রাখুন, তিনি সর্বদা উপযুক্ত সময়ে কাজ করেন। না এক মুহূর্তে আগে আর না এক মুহূর্তে পরে।


যারা আপনার ক্ষতি করেছে, তাদের অকল্যাণ কামনা করবেন না। বরং দু’আ করুন যেন তারা নিজেদের ভুলগুলো স্বীকার করে এবং হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়। প্রতিশোধের ব্যাপারে চিন্তাগ্রস্থ হবেন না। উপযুক্ত সময়ে আমাদের যে শিক্ষা পাবার কথা, সর্বশক্তিমান আল্লাহ যেন, আমাদেরকে তাই দেন। যিনি নীতিনিষ্ঠ ও ন্যায়পরায়ণ, তার পাশে আল্লাহ সর্বদা থাকেন। 


হাসির আড়ালে কষ্ট লুকানো সহজ নয়। এটা অন্যতম কঠিন এক কাজ। এটা আপনি তখনই করেন, যখন আপনি নিজের চেয়ে অন্যের ব্যাপারে বেশি যত্নশীল। মনে রাখবেন, একটি হাসি কত কিছু লুকাতে পারে . . . ভয়, কষ্ট, বিরহ, কান্না (আরও কত কি)। কিন্তু এগুলো একটি জিনিসেরই প্রতিফলন ঘটায়। (আর তা হচ্ছে) আত্মিক ও মানসিক শক্তি!


কঠিনতম পরিস্থিতিতে বিনয়ী থাকতে নিজেকে প্রশিক্ষিত করুন। নিজের অবস্থানে দৃঢ়তার সাথে দণ্ডায়মান হন, কিন্তু তা ‍বিনয়ের সাথে। অন্যদেরকে অভিশাপ দিতে এবং শপথ করতে দেন। চতুর্দিকে বিস্তৃত আজকের সস্তা, মৌখিক গালগালির ঊর্ধ্বে ওঠাকে বেছে নেন। আজ বা কাল বিলম্বে হলেও তারা নিজেদের ভুল উপলব্ধি করবে এবং বুঝতে পারবে যে, কতটা আক্রমণাত্মক তারা ছিল!


আপনি যতই আঘাতপ্রাপ্ত, রাগাম্বিত কিংবা হতাশ হন না কেন, আপনাকে (আরও) তিক্ত করার সুযোগ মানুষকে দেবেন না। নিজেকে তাদের পর্যায়ে নামিয়ে আনবেন না। সৌজন্য ও ভদ্রতার সাথে সামনে এগিয়ে চলুন।


সমস্যার ব্যাপারে রাগাম্বিত হয়ে সময় নষ্ট করবেন না। বরং এই শক্তিকে সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করুন। আল্লাহর হেদায়েতের লাভের জন্য দু’আ করুন। তিনি আপনার জন্য একটি পথ অবশ্যই বের করবেন।


প্রতিবার আপনাকে যা-ই পরাস্ত করুক না কেন, ওঠে দাঁড়ান। (দুঃখ-কষ্ট) সহ্য করুন, কঠোর চেষ্টা চালার এবং কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না। মস্ত বড় অনুগ্রহ মস্ত বড় অধ্যবসায়ের সাথেই আসে।


দুশ্চিন্তা, হতাশা এবং নিরাশায় ঘেরা জীবন অতিবাহিত করবেন না। এটা আপনার শক্তিকে নিঃশেষ করে এবং চুরি করে আপনার আনন্দকে। (এমনটি হলে) আপনি আল্লাহর বরকত ও আশীর্বাদকে দেখতে সক্ষম হবেন না। 


মানুষ যখন আপনার সাথে নেতিবাচক আচরণ করে, তখন সেটাকে ইতিবাচক কিছুতে বদলে দেন। নিজেকে তাদের পর্যায়ে নামিয়ে আনবেন না। আপনার চারপাশে যত অনুগ্রহ আছে, সেগুলোর তারিফ করুন।


অন্যের ব্যাপারে খারাপ ধারণ পোষণ করা অন্তরের একটি রোগ। তাদেরকে সন্দেহের সুবিধাটুকু দেন, দয়ালু হন এবং আপনি যে মর্যাদাবান, তা অন্যদের দেখিয়ে দেন। 


সর্বশক্তিমান আল্লাহর তরফ থেকে যখন আপনি কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি হন, তখন দ্রুত খারাপ কিছু একটা ধরে নেবেন না। প্রতিটি বাধার মাঝেই ভালো কিছু রয়েছে। ধৈর্যশীল হন। আপনি ভালো-টা দেখবেনই।


আপনার মাথায় ঘুরতে থাক ওই রাগাম্বিত স্বর, যা চায় আপনি ওইসব লোকের থেকে প্রতিশোধ নেন, যারা আপনাকে আঘাত দিয়েছে বা আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে, সেই রাগাম্বিত স্বরকে জয় করাই ধৈর্য।   


যখন কেউ আপনার সাথে খারাপ কিছু করে বা আপনাকে খারাপ কিছু বলে, তখন সেটাই ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। তাদের বাজে প্রতিক্রিয়ার ঘোরে বসবাস করবেন না। যেকোনোভাবে তাদের প্রতি শোভন হন।


আপনি যদি সঠিক পথে ফেরার সংগ্রাম করতে থাকেন, তবে আপনার সংগ্রামকে ‍উপহাসের পাএ বানানোর সুযোগ কাউকে দেবেন না। এটা আল্লাহর কাছে আপনার প্রত্যাবর্ততের পথ। তিনিই আপনাকে পথ দেখাবেন। ধৈর্য ধারণ করন।


জীবন সুখ ও দুঃখ উভয়টি  সাথে করে নিয়ে আসে। যখন বিষন্ন থাকেন, তখন ধৈর্য ধরুন, আর যখন সুখী থাকেন, তখন কৃতজ্ঞ হন। আল্লাহ আপনাকে পুরস্কৃত করবেন এবং আপনার মর্যাদা বুলন্দ (উঁচু) করবেন।


আমরা সর্বদা এতটা তাড়াহুড়ার মধ্যে থাকি যে, যখন পরিস্থিতি বিরূপ হয়, তখন আমরা হাল ছেড়ে দেই। ধৈর্যশীল হন। আস্থা রাখুন। উওম কিছু না কিছু উপস্থিত হবেই, যখন আপনি তার প্রত্যাশা একেবারেই করেন না।


কিছু মানুষ আপনাকে এবং আপনার ভুলগুলো নিয়ে সমালোচনা করতে ভালোবাসে। বস্তুত তারা (নিজেদেরকে) আপনার চেয়ে হীন ভাবে। স্থির থাুকন। জেনে রাখুন, সমস্যা গোড়া তারাই আপনি নন।


যখন আপনার পরীক্ষা নেওয়া হয়, তখন আপনি কি ধরনের আচরণ করেন, তা আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। কষ্ট কি আপনাকে রাগিয়ে তোল? আপনি কি রাগ অন্যের ওপর ঝাড়েন? মনে রাখবেন, কষ্ট এই জীবনেরই একটি অংশ। 


ভিন্নমত পোষণের জন্য আমাদের (কাছে বহু) কারণ থাকতে পারে, কিন্তু স্বয়ং ভিন্নমত পোষণ যেন ঘৃণার কারণ না হয়। প্রকৃতপক্ষে রাগাম্বিত হওয়াটা অন্যের নয়, বরং তা আমিাদের নিজ সওারই প্রতিফলন। 


দম নিতে এবং আরও বেশি হাসতে শিখুন। আপনার মোকাবিলা করা প্রতিটি চ্যালেঞ্জেরই একটি সমাধান রয়েছে। আল্লাহ তা নিশ্চিত করবেন। আপনি আপনার অংশটুকু করুন এবং বাকিটা আল্লাহ সম্পন্ন করবেন। 


যখন আপনি নির্যাতন ও অন্যায়ের শিকার হন, তখন বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নেন। আপনি কখনো একা নন। শক্ররা কখনো জয় লাভ করবে না। চূড়ান্ত বক্তব্য সর্বশক্তিমান আল্লাহরই। 


এই জীবনে ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার একটি পরীক্ষা মাএ। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তনের জন্য এটাই আপনার পথ। এটাকে অন্য কারো সাথে তুলনা করবেন না। 


সময় এখন কঠিন। অনিশ্চিয়তা প্রচুর। ঘৃণা দাবানলের  মতো ছড়িয়ে পড়ছে। নতি স্বীকার করবেন না। ধৈর্য ও দু’আই হচ্ছে আমাদের প্রয়োজন সমাধান। 


অন্যরা যেসব জিনিসের আশীর্বাদে ধন্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে অত্যধিক চিন্তা করে ঘুম হারাম করবেন না। রিযিকের মালিক সর্বশক্তিমান আল্লাহ। তাই সুখি হন। তিনি আপনাকে আরও দেবেন। 


সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে যা দিতে পারেন, অন্যের কাছে তা চাওয়া এবং তার জন্য হাত পাতা বন্ধ করুন। আপনার সৃষ্টিকর্তা এবং আপনার রিযিকদাতা (আল্লাহর) কাছেই ওই জিনিসটি চান। আপনি কখনোই নিরাশ হবেন না।


আপনাকে যা বলা হয়েছে, তার প্রতিটিতে প্রতিক্রিয়া দেখানো বন্ধ করুন। (বরং) পর্যলোচনা করুন এবং সেগুলোর মধ্য থেকে কোনগুলোর উওর দেওয়া প্রয়োজন, তার সঙ্গত কারণ বের করুন। (এর মাধ্যমে) আপনি নিজেকে অনেক ঝামেলা থেকে রক্ষা করতে পারবেন। 


সর্বশক্তিমান আল্লাহ, অন্যরা আমাদের সম্পর্কে কি ভাবে, তা নিয়ে ‍দুশ্চিন্তা করা থেকে আমাদের অন্তরকে হেফাজত করুন। আপনি আমাদের থেকে যা চান, সেগুলোতে আমাদেরকে অবিচল রাখুন।


জীবনে আমরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হই, সেগুলো থেমে যাবার নিশানা নয়। বরং সেগুলো সর্বশক্তিমান আল্লাহ কর্তৃক আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি মাএ। তাই সেগুলোকে সামনে এদিয়ে যাওয়ার পথ নির্দেশ হিসেবে ব্যবহার করুন। 


মনে রাখবেন, হয় আপনি পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিযোগ করবেন, আর না হয় আপনি এই বিশ্বাস রাখবেন যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ এগুলোর মাধ্যমে আপনাকে পথ দেখাবেন, (তাই) এগুলো থেকে শিক্ষা নেন এবং বেড়ে ওঠুন। পছন্দ আপনার হাতেই। 


প্রতিবন্ধকতা এবং অন্যের সমালোচনা সত্ত্বেও সামনে এগিয়ে যান। কঠোর পরিশ্রিম করুন এবং সর্বোত্তম ‍উপায়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহকে সম্মান দেন। এতে করে আপনার বিরুদ্ধে থাকা অন্তরগুলোকে তিনি বদলে দেবেন।


আপনার সন্তানদের (প্রতিপালনের) ব্যাপারে কখনো হাল ছেড়ে দেবেন না। বিষয়াদি যতই খারাপ হোক না কেন, কখনো এটা বলবেন না যে, আপনি আপনার ধৈর্যের শেষ সীমাতে পৌঁছে গেছেন। ক্রমাগত দু’আ করে যান। আল্লাহ (সবকিছু) জানেন এবং তিনিই (সবকিছুর) তত্ত্বাবধান করেন। 


আপনি হয়তো এমনটি বোধ করতে পারেন যে, বিভিন্ন দিক থেকে আপনাকে টানা হচ্ছে। দুনিয়া একদিক থেকে টানছে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহ ঠিক বিপরীত দিক থেকে আপনাকে টানছেন। ঈমানে দৃঢ় থাকুন। 


সর্বশক্তিমান আল্লাহ জিনিসটি এখনো আপনাকে দেননি বলে এর মানে কখনো এই নয় যে, তিনি দেবেন না কিংবা দিতে সক্ষম নন। তিনি ওই জিনিসটি ঠিক তখনই আপনই আপনাকে দেবেন, যখন আপনি প্রস্তুত। (সবকিছুই) আল্লাহ ভালোভাবে অবগত।


কিছুই আকস্মিকভাবে ঘটে না। জীবনের শিক্ষাকে উপলব্ধি জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের জন্য প্রতিটি পদক্ষেপকে পরিকল্পনা মাফিক সাজিয়েছেন। তাই তাঁর প্রতি আস্থা রাখুন। সামনে এগিয়ে চলুন। পরিশেষে আপনিই (বিজয়ের) হাসি হাসবেন।

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.