আশা নিয়ে বিশেষ উক্তি পর্ব- ১ ফিরেএসো)

আশা নিয়ে বিশেষ উক্তি

আপনি যতই বিমর্ষ, হতাশ, দ্ধিধাগ্রস্থ হন না কেন, সর্বদা সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসায় মশগুল থাকুন। তিনি আপনাকে এমনভাবে পুরস্কৃত করবেন, যা আপনার কল্পনার বাহিরে! 

সবাই আপনাকে মূল্যায়ন করবে না। বরং পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, হাতে গোনা কয়েকজনই আপনার পাশে দাঁড়াবে, আর এরাই আপনার অজ্ঞাতে আপনার জন্য দু’আ করে। 

না আপনার কষ্ট চিরকাল রবে, আর না আপনার দুঃখ। এই দুনিয়াতে কিছুই চিরস্থায়ী নয়। আপনার উতরে যাওয়া প্রতিটি পরীক্ষা আপনাকে আরও শক্তিশালী করে। আপনার অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

এই দুনিয়াটাই যদি আপনার ধ্যান-জ্ঞান হয়, তবে সারাক্ষণই আপনি চিন্তিত থাকবেন এবং মনোযোগহীনতায় ভুগবেন। আর আপনার অগ্রাধিকার যদি হয় আখিরাত, তবে স্রষ্টা আপনার অন্তরকে তৃপ্তি দিয়ে পরিপূর্ণ করবেন। 

আতংকিত হবেন না, হতাশাগ্রস্থ হবেন না, চিন্তিত হবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছা মোতাবেক এখন ঠিক সেখানেই আছেন, যেখানে তিনি চেয়েছেন। আল্লাহর পরিকল্পনার প্রতিটি অংশে আপনি যেসব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন, সেগুলো আপনাকে ঠিক সে আকৃতি ও ছাঁচেই গড়ে তুলবে, যেমনটি আপনার হওয়ার কথা ছিল।

আপনার যদি ভালো একটি অন্তর থাকে, তবে সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন। এটা নিয়ে কখনো দুঃখ করবেন না। লোকজন আপনাকে হতাশ করতে পারে, কিন্তু যাই ঘটুক না কেন, দিন শেষে আপনিই জয়ী হবেন। আল্লাহই সবকিছু জানেন ও দেখেন। 

এমন কেউ না কেউ সব সময়ই থাকবে, যে বেশ লম্বা, ধনী এবং ভালো চেহারার সাথে যার ভালো চাকুরিও রয়েছে --এবং আরও কত কি। হয় আমরা নিজেরদেরকে তুলনার এই বিপজ্জনক ফাঁদে পিছলে যেতে দিবো, আর না হয় এতকিছুর পরেও আমরা স্মরণ করবো যে, আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ সংগ্রাম রয়েছে। এটাই জীবন। জীবনকে উপভোগ করুন।

ভালো মানুষের সাথে খারাপ কিছু ঘটে কেন, অনবরত এই একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই রেখেছেন যে, তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। তিনি আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলেন। কেননা, তিনি ভালো করেই জানেন, কখনো আপনি আপনার সবচেয়ে দুর্বল মানসিক অবস্থায় থাকেন এবং (এইপরীক্ষার মাধ্যমে) খুব সম্ভবত আপনি তাঁর নিকটবর্তী হয়ে যেতে পারেন। 

কখনো আশা হারাবেন না

হারানোটা (মেনে নেওয়া) কখনোই সহজ নয়। আর ভালোবাসার কাউকে হারানো, সম্পদ হারানো, চাকুরি হারানো তো সহজে (মেনে নেওয়ার মতো) নয়। এগুলো আপনার অন্তর ভেঙ্গ চুরমার করে দিতে পারে। কিন্তু এগুলো যেন আপনাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না করে। আপনার অন্তর আরোগ্য লাভ করবে; এটা নরম হবেই। আপনাকে স্রষ্টার কাছে টেনে আনা হবে, আর আপনি আবারও পূর্ণতা লাভ করবেন। 

অনুশোচনার ঘোরে জীবন কাটাবেন না। অতীত গত হয়েছে। আজ নতুন একটি দিন; (আজকের এই নতুন দিনে) আপনি আর আগের সেই ব্যক্তিটি নন। আজকের দিনটি গতকালের চেয়ে ভালো যাবে, এটা বিশ্বাস করুন। বস্তুত আশার সাথে সম্মুখ পানে দৃষ্টি দেওয়া ও এগিয়ে যাওয়াটাই মুখ্য। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার জন্য নতুন যেসব পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছেন, সেগুলো তালাশ করুন। 

আপনার যাএা কেবল আপনার একারই। না সবাই বুঝবে, আর না সবাই তা পছন্দ করবে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। অতীতের কষ্টকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করুন, যে শক্তি আজ আপনার (বড় বেশি) প্রয়োজন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ। আমি আমার বোঝা আপনার কাছে সোপর্দ করছি। কারণ, আমি আর তা একা বইতে পারছি না। আমাকে শক্তি দেন, আমাকে স্বস্তি দেন, আমার অন্তরকে শিফা দেন এবং এই বোঝা বহনের তাওফিক আমাকে দেন।

যখন আপনার হৃদয় গুরুভার এবং বিষন্ন আপনার মন, তখন সর্বশক্তিমান আল্লাহর সীমাহীন রহমতের দিকে মুখ করুন। আপনি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যান না কেন, তিনি আপনার (সাহায্যের) জন্য সেখানেই আছেন। 

কখনো আশা হারাবেন না। আশা-ই আমাদেরকে গতিশীল রাখে। (নতুন করে) আবার দু’আ করুন। আবার আশা করতে শুরু করুন। আমাদের জীবনে যা যা ঘটছে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার সবই জানেন। 

আপনার সাথে যাই ঘটুক না কেন, আশা সব সময়ই টিকে থাকে। আপনাকে এটা বিশ্বাস করতেই হবে। হতাশাকে বাদ দিয়ে আশাকে বেছে নেন। মনে রাখবেন, কিছুই চিরস্থায়ী নয়। ভালো কিছুর জন্য পরিস্থিতি বদলে যাবে, এই আশাকে আঁকড়ে ধরুন। আর সেই পরিবর্তন শীঘ্রই আসবে।

আপনি যতই একা হন না কেন, আসল সত্য হচ্ছে : আপনি একা নন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সব সময় নিকটেই আছেন। (হ্যাঁ) খুবই নিকটে। আপনি কি ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন, তিনি তা জানেন। তিনি সবকিছু সম্পর্কে অবগত। যখন সবাই আপনাকে ছেড়ে চলে যায়, তখন আল্লাহ সর্বদা আপনার পাশে আছেন, এটা জেনে তাঁরই মাঝে স্বস্তি তালাশ করুন। 

আমাদের অনেকেই অতিভাবনার দোষে দোষী। মনে রাখবেন, যুদ্ধের সূচনা আপনার মন থেকেই হয়। ময়দানে নামার আগেই নিজেকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে পরাজিত করবেন না। সঠিক দিকে নিজের মনকে নিবদ্ধ করুন। পরিস্থিতির ব্যাপারে ইতিবাচক হন। আর তখনই আপনি পার্থক্য দেখতে পাবেন। 

নিজের দুর্বলতম মানসিক অবস্থা, যেখানে আপনি একেবারেই অসহায়, সেখানেও আশা হারাবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার পথে এমনকিছু পাঠাবেন, যার ব্যাপারে আপনি খুব কমই আশা করেছিলেন। 

যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হন না কেন, যখন আপনার আলো ছড়ানো এবং সামনে এগিয়ে যাবার সময়, তখন আপনি আলোও ছড়াবেন এবং সামনেও এগিয়ে যাবেন। আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তা কেউই আটকাতে পারে না।

পার্থিব বিষয়ে এতো মাথা ঘামানোর কিছু নেই। ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তা করা কিংবা অতীতের জন্য অনুতাপ করা সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। এগুলো সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট সমর্পণ করুন।

না আপনার কষ্ট চিরকাল রবে, আর না আপনার দুঃখ চিরকাল থাকবে। এই দুনিয়াতে কিছুই চিরস্থায়ী নয়। আপনার উতরে যাওয়া প্রতিটি পরীক্ষী আপনাকে আরও বলীয়ানরূপে গড়ে তোলে। আপনার অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। 

যে সুযোগগুলো হাতছাড়া হয়েছে, আক্ষেপের সাথে সেগুলোর দিকে ফিরে তাকাবেন না। আল্লাহ সেগুলোর দরজা কোনো না কোনো কারনো বন্ধ করে দিয়েছেন। যে দরজাগুলো আমাদেরকে সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনে ধাবিত করে, তিনি যেন সেগুলো খুলে রাখেন। 

আপনি যে পরিস্থিতিতে আছেন, সেগুলোর দ্বারা আপনি ফাঁদে আটকে আছেন, এমনটি বোধ করবেন না। কষ্ট, একাকীত্ব, আর্থিক দুর্দশা; সর্বশক্তিমান আল্লাহর মুখাপেক্ষী হন। তিনি একটি পথ বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই তাঁর উপর ভরস করুন। 

যে দিনটিতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করবো, সেই দিনই আমরা (প্রকৃত) সাফল্য লাভ করবো। কোনো কষ্টই সেদিন মনে থাকবে না। (আল্লাহর কাছে) দু’আ করুন, তিনি যেন আমাদেরকে স্বীয় রহমতে সেখানে প্রবেশ করান। 

যা ঘটার তাই ঘটবে। জীবনে যা ঘটে, তার সবকিছুর ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সর্বদা ( সবকিছু  নিজের) পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখেন ।  

দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বড় চোর

গতকালের ব্যর্থতাকে বর্তমানে টেনে আনবেন না। ব্যর্থতা থেকে শিখুন। সামনে এগিয়ে যান। সর্বশক্তিমান আল্লাহ উওম জিনিস সঞ্চিত করে রেখেছেন। নিজের সবটুকু আস্থা আল্লাহর উপর রাখুন। 

মানুষ যখন আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা আঁটে, তখন দুঃখ করবেন না। সবকিছুই সর্বশক্তিমান আল্লাহর পুর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। মনে রাখবেন, সকলের ইচ্ছার ওপর রয়েছে তাঁর ইচ্ছা।

আপনি যাই করুন না কেন, মানুষ কথা বলবেই। যা সঠিক, তাই করতে থাকুন। বিশ্বাস রাখুন; পর্দার আড়ালে যা ঘটছে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার সবই জানেন। 

দুশ্চিন্তাটাই সবচেয়ে বড় চোর। এটা আপনার সময়, শক্তি এবং আত্মিক প্রশান্তি চুরি করে। নিজের দুশ্চিন্তাকে ইবাদতে বদলে দেন। আল্লাহ সুবাহানু-ওয়া-তাআলা-র মুখপেক্ষী হন, তবেই আপনি শক্তি খুঁজে পাবেন। 

জীবনে কিছুই উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘটে না। সম্ভাব্য সর্বোওম পথে আপনাকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করতে আল্লাহ যা যা করছেন, তা সর্বশক্তিমান আল্লাহই ভালো জানেন। আপনাকে তাঁর পরিকল্পনার উপর আস্থা রাখতে হবে। তিনিই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সবকিছুর পরিকল্পনা করে রেখেছন। 

জীবন কখনো কখনো কঠিন হতে পারে। (কখনো কখনো) কোনো জিনিস সম্পন্ন করতে এদিক-সেদিক বিরতিহীনভাবে ছুটে বেড়াতে হয় এবং চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এগুলো যেন আপনাকে আপনার জীবনের প্রতি বিরক্ত না করে তোলে। আপনার চেয়ে যাদের কম আছে, যারা দ্বিধাহীন চিওে আপনার অবস্থানে যেতে চাইবে, তাদের দিকে তাকাতে শিখুন। সবকিছুর জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন।

শক্তিশালী হন। ঈমানে দৃঢ় ধাকুন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার ভাগ্যে যা রেখেছেন, তার মোকাবিলা করুন। সর্বদা আল্লাহর সাহায্য ও নিরাপওা চাইতে থাকুন। অন্যরা কি বলে, তা নিয়ে মোটেও দুশ্চিন্তা করবেন না। যখন আপনি জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছাবেন, তখন আপনি লোকদের কাছে জবার দিতে যাচ্ছেন না, বরং আপনি শুধু আল্লাহকে জবাব দিতে যাচ্ছেন। 

এমন একটি হৃদয়ের জন্য দু’আ  করুন, যেখানে শান্তি, স্থিরতা ও আশা বিরাজ করে। দু’আ করুন, যেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ এই হৃদয়কে হিম-শৈত্য ও তিক্ততা থেকে সুরক্ষিত রাখেন। দু’আ করুন, যেন আল্লাহ এটাকে ঈমানে দৃঢ় রাখেন। 

আপনার ব্যর্থতা যখন আপনাকে আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছে নিয়ে আসে, তখন তা আর ব্যর্থতা নয়। বরং সেটাই আপনার সাফল্য। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে এর জন্য ধন্যবাদ দেন। 

ঠিক এই  মুহূর্তে আপনার জীবনে যা ঘটছে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ (এ পর্যন্ত আপনার জন্য) যা যা করেছেন , সেগুলোকে কখনো আপনার প্রাপ্য অধিকার ভাববেন না। মনে রাখবেন, সবকিছুই কোনো না কোনো করণে ঘটে । 

আল্লাহর অশেষ নেয়ামত

এটা মেনে নিতেই হবে যে, প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহ আমাদেরকে যে অনুগ্রহ দিয়েছেন, তা আমরা লিখে শেষ করতে পারবো না। কৃতজ্ঞ হতে শুরু করুন। প্রতিদিন আল্লাহকে ধন্যবাদ দেন ।

(জীবনে) যেমন সুখ ও শান্তি রয়েছে, তেমনি রয়েছে কষ্ট ও সংগ্রাম। এটাই ও জীবনে প্রকৃতি। কঠিন সময়গুলোকে আপনার উপর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেবেন না। জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে চেষ্ট করুন। আপনার যা আছে, সেগুলোকে মূল্যায়ন করতে এটা আপনাকে সহায়তা করে। সবকিছুর ওপরে নিজের অন্তর ও আত্মাকে সুরক্ষিত রাখুন। 

সর্বশক্তিমান আল্লাহ কতই না মহান! যখন আপনি পাপ করেন, তখন তা কেবল একটা পাপ হিসেবেই লিপিবদ্ধ হয়। আর যখন আপনি কোনো ভালো কাজের নিয়ত করেন, কিন্তু শেষ অবধি যদি তা নাও করেন, তথাপি তা একটি পুণ্য হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়। আর যখন আপনি তা বাস্তবায়িত করেন, তখন তা দশগুণ হিসেবে লিপিদ্ধ করা হয়। 

যখন আপনি এটা বিশ্বাস করেন এবং এই আস্থা পোষণ করেন যে, যত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই যান কেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনার পেছনে আছেন, (তবে জেনে রাখুন) এটাই ঈমান। ঠিক ওই সময়টিতে জীবন অধিক প্রশান্তির ও কম দুশ্চিন্তার হয়। কেননা, আপনি জানেন যে, এই জীবনের ভালো ও মন্দ সময়গুলো তিনিই আপনাকে পার করিয়ে দেবন। 

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.