যদি সুখী হতে চান, তবে দিতে শিখুন পর্ব-৫ (ফিরেএসো)


 
যদি সুখী হতে চান, তবে দিতে শিখুন 

যদি সুখী হতে চান, তবে দিতে শিখুন। কেবল সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দিয়ে যান। কাউকে সুখী করার চেয়ে মহং কোনো অনুভূতি নেই।

পদমর্যাদা বা সম্পদের কারনে সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করেন না। তিনি আপনার অন্তর, আপনার ধার্মিকতা এবং তাঁর নিকট আপনার নৈকট্যের মাএার দিকেট দৃষ্টি দেন।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে যা দিয়ে অনুগ্রহমণ্ডিত করেছেন, তা-র দিকে তাকান। কৃতজ্ঞরাই সুখী। তারাই কম উদ্বিগ্ন। (কৃতজ্ঞ হন, তবেই) আল্লাহ আপনাকে আরও দেবেন।

সমাজ আপনাকে তার নিজস্ব মানদণ্ড দিয়ে মূল্যায়ন করবে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবেন না। আপনার দেখানো আগ্রহ, আপনার ভাগ করে নেওয়া ভালোবাসা; বস্তুত ‍এগুলোই সর্বাপেক্ষা মুখ্য বিষয়।

যারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে আল্লাহর কাছে দু’আ করে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকটএর চেয়ে প্রিয় কোনো জিনিস নেই। পিছু হটবেন না। আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করুন। কোনটা সর্বোওম, তা তিনি অবগত।

(আসুন) প্রতিটি দিন আমরা আরও ভালো হতে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর আরও নিকটতর হতে চেষ্ট করি। এটা সহজ নয়। এটা আমাদের কামনা-বাসনা এবং আমাদের আমিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত চালিত এক সংগ্রাম। আল্লাহ (সবকিছু) অবগত আছেন।

নিজে যতটুকু গ্রহন করবেন, তার থেকে বেশি দিতে শিখুন। বিনয়ী হন। দিনশেষে দুনিয়ার ব্যাপারে বিশেষ যত্নশীল হন। মনে রাখবেন, আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাদের কোনো মূল্য নেই।

বাহ্যিকভাবে অন্যের যা আছে, কেবল তা-ই দেখে অভিভূত হবেন না। আরও গভীরে দৃষ্টি দেন। চারিত্রিক সততা এবং আন্তরিকতার অনুসান্ধান করুন। কেননা, দিনশেষে এগুলোই মূখ্য।

যখন আপনি কোনো ইবাদতের কাজ কেবল এই কারনে করেন যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে আদেশ করেছেন এবং তা লোক দেখানোর জন্য কিংবা অন্যের থেকে বাহবা পাওয়া জন্য নয়, তখন তা-ই (ইবাদতের) সবচেয়ে বিশুদ্ধ রুপ।

 সম্মানের সাথে মানুষকে মূল্যায়ন করুন

সৌন্দর্যের ব্যাপারে দুনিয়ার নিজস্ব যে সংজ্ঞা রয়েছে, তা মেনে নিতে দুনিয়া আপনাকে ধোঁকা দিতে চাইবে। কিন্ত শেষ অবধি আমরা শুধু সবচেয়ে সুন্দর অন্তর ও আত্মাকেই মনে রাখি।

সমাজ আজ এতটাই চাপে আছে যে, মানুষকে রুঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করটা এখন (বেশ) সহজ (একটা বিষয়ে পরিণত হয়েছে)। সদয় হওয়ার বিষয়টি (সর্বদা) স্মরন রাখবেন। আমাদের প্রত্যেকেই আত্মিক যুদ্ধে বত।

যাকে অবজ্ঞা করেন এবং ছোট ভাবেন, হয়তো সে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দাদের একজন। আপনি তা জানেন না। তাই ফাঁদে পা দেবেন না। সম্মানের সাথে মানুষকে মূল্যায়ন করুন।

যদি জীবনে সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত চান, তবে তাঁকে দেখিয়ে দেন যে, আপনি তাঁকে সর্বদাই তালাশ করেন এবং (আপনার হৃদয়ে) সবকিছুর ঊর্ধ্বে কেবল তিনি-ই বিরাজ করেন।

সর্বশক্তিমান তো তিনি-ই, যিনি জানেন আপনার অন্তরে কি লুকিয়ে আছে। আপনাকে অন্য কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে, এমনটি মনে করবেন না। শুধু আল্লাহই মুখ্য।

প্রসংশার জন্য কাজ করবেন না

অহংকারের ব্যাপারে সাবধান হন। শুধুমাএ বিনয়ী ব্যাক্তিই সর্বশক্তিমান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে এবং এটা উপলব্ধি করতে পারে যে, আল্লাহ ছাড়া তাদের কোনো মূল্য নেই। যে মুহূর্তে আপনার অহংকার বাসা বাঁধে, তখন একটি বেষ্টনি গড়ে ওঠে-আপনার এবং আপনার সৃষ্টিকর্তার মাঝে এক বেষ্টনে। আল্লাহর জন্য নিজেকে বিনয়ী করুন, তবেই তিনি আপনাকে সম্মানিত করবেন।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ হয়তো এটা যাচাই করতে, আপনাকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, আসলেই কি আপনি আপনার কথার প্রতি সত্যনিষ্ঠ নাকি কেবল মুখেই খই ফোটান। আপনার কর্ম কি আপনার কথার মতোই বলিষ্ঠ? যা প্রচার করেন, অনুশীলন করুন, তবেই মর্যাদায় তিনি আপনাকে পুরুষ্কৃত করবেন।

যখন আপনি পূর্ণভাবে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করবেন, তখন তিনি যদি আপনাকে কঠিন সময় ও চ্যালেঞ্জ দিয়ে পরীক্ষা করেন, তবে আশ্চর্য হবেন না। এই জিনিসগুলো আপনাকে তাঁর নিকটে নিয়ে আসে। আন্তনিকতার সাথে তাঁ দেখিয়ে দেন যে, আপনি তার জান্নাতের যোগ্য।

দানশীল হন। এর মানে সুধু পয়সা-কড়ি দেয়া নয়। (বরং) হাসি, অন্যের কষ্ট দূর করা, ভালো কথা বলাটাও (দান)। (এগুলোর মাধ্যমে) আপনার অন্তর (অবশ্যই) সুখি হবে।

আপনার করা ভালো কাজেগুলোকে আপনার এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর মাঝে(সীমাবদ্ধ) রাখুন। প্রশংসা কুড়ানোর জন্য জনসম্মুখে এগুলো প্রদর্শন করবেন না। আপনার আন্তরে কি আছে, তিনি তা জানেন। (তাই) অন্তরকে পরিশুদ্ধ করুন।

স্বর্থপর হলে চলবে না

ভালো কাজ করতে গিয়ে কখনো ক্লান্ত হবেন না; ওই কাজটি যতই ছোট হোক না কেন । মনে রাখবেন, মাঝে মাঝে আঁকড়ে ধরার জন্য কারোর কেবল একটি হাতেরই প্রয়োজন হয়; প্রয়োজন হয় একটি অন্তরের, যা উপলদ্ধি করে।

পার্থিব সাহায়-সম্পদের দিকে দৃষ্টি দেখবেন না এবং অন্যের সম্বন্ধে কোনো মত গঠন করবেন না। এগুলো নিয়ে চিন্তিত হন, হবে সমস্যা আপনার মাঝেই নিহিত।

দুনিয়াকে দেখোনোর জন্য অন্যের সামনে নিজেকে আপনি যেভাবে প্রদর্শন করেন, সেটা যেন লোকচক্ষুর অন্তরালে আপনি যে জীবন যাপন করেন, তা থেকে ভিন্ন না হয়। দরজার অন্তরালে যদি আপনার ভিন্ন কোনো নিয়াম কানুন থাকে, তবে আপনার সমস্যা রয়েছে, যা-র সমাধান প্রয়োজন।

মানুষের সেবা করার ‍সময় আমাদেরকে স্বর্থপর হলে চলবে না। আপনার চারপাশে কি ঘটছে, সেটা জেনে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা সবচেয়ে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত। শান্তি, স্থিরাতা এবং ইতিবাচক সমৃদ্ধি কখনো অর্জিত হবে না, যখন আমরা কেবল নিজেদের চিন্তায় বিভোড়।

ওইসব বিসধর “বন্ধুর” ব্যাপারে সতর্ক হন, যারা কখনোই আপনার প্রশংসা করে না। আপনার অর্জনে না তারা ভালো একটি শব্দ বলে বা আপনাকে অভিনন্দন জানায়। প্রকৃতপক্ষে, যখন আপনি নিচে থাকেন, খুব সম্ভবত তারা আপনাকে লাথি মারবে। তাদের বিষয়টি সর্বদা এমনই, তারা কেবল নিজেদেরটাই বুঝে। আপনার সমস্ত শক্তি তারা নিংড়ে নেবে। (তাই তাদের থেকে) দূরত্ব বজায় রাখুন।

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.