অন্যের জন্য দু’আ করুন পর্ব-৪ (ফিরেএসো)

অন্যের জন্য দু’আ করুন

জীবনে এমনকিছু সব সময়ই থাকবে, যা আমরা আকুলভাবে চাই । সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখুন । দুনিয়া যখন ঘুমিয়ে, তখন তাঁর সাথে সংযুক্ত হন । তাঁকে আপনার ইখলাস বা নিষ্ঠা দেখিয়ে দেন ।

যখন আপনি অন্যকে সম্মানের সাথে মূল্যায়ন করেন, সাহায্যের হাত বাড়ান এবং কল্যণ ছড়ান, বস্তুত সত্যিকার ঈমানদার বলতে যা বুঝায়, তখন আপনি তা-র প্রতিমূর্তি ধারন করেন । সামনে এগিয়ে যান ।

যখন আপনি কারো জন্য দু’আ করেন, তখন মনপ্রাণ উজাড় করে তা করুন । ভালোর জন্য দু’আ করুন এবং কখনো খারাপ নিয়ত করবেন না । নিজেদের স্বার্থেই আমাদের প্রত্যেকের দু’আর প্রয়োজন ।

অন্যের জন্য দু’আ করুন । হ্যাঁ, কেবল নিজের জন্য দু’আ করবেন না । তারা হয়তো এমন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার ব্যাপারে তারা কখনো আপনাকে কিছু বলবে না । তাই গভীর ভাবে ভাবুন । দু’আ করুন ।

যখন আমরা অন্যের থেকে বেশি আশা করি, তখন আমরা হতাশ হই । কেননা, আমরা তাদের জন্য বিশেষ করতে ইচ্ছুক ছিলাম । কিন্তু জেনে রাখুন, প্রত্যেকেই আলাদা ।

 অন্যের ব্যাপারে কিছুই অনুমান করবেন না

কেউ দেখুক বা না ‍দেখুক, আপনার আচরন সব সময় একই রকম হওয়া উচিত। সর্বদা সদয় থাকুন। যা সঠিক, তা করুন এবং সর্বদা অন্তর থেকে (অন্যদের দয়া, করুণা ও ক্ষমা) দিয়ে যান।

বস্তুগত বিষয়াদি থেকে আপনার অনুরাগকে সরিয়ে নেন। আপনার যা প্রয়োজনীয় নয়, তা দান করে দেন। আপনি আপনার জীবনকে আরও বেশি শান্ত এবং মনকে আরও বেশি পরিচ্ছন্ন পাবেন ।

সত্য বলুন এবং যা বলেন, তা গুরুত্ব দিয়ে বলুন। আপনার কথায় আপনার সম্মান। বেশিরভাগ মানুষ অনর্থক প্রতিশ্রুতি দেয়, যা পূরণের ইচ্ছা তারা কখনোই করে না।

প্রতিদানের আশা ছারাই দান করুন। এটাই আপনার অন্তরের সৌন্দর্য্য। মানুষ যদি তা না দেখে, তবে তা স্বাভাবিক। সর্বশক্তিমান আল্লাহ ঠিকই (সবকিছুর) হিসাব রাখেন।

অন্যের ব্যাপারে কিছুই অনুমান করবেন না। তারা হয়তো এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যার অভিজ্ঞ আপনি কখনো লাভ করেননি এবং যা সম্পের্কে আপনার কোনো ধারনা নেই। সর্বদা সদয় থাকুন।

 সর্বদা বিনয়ী হন

স্বর্থপর হবেন না এবং শুধু নিজেকে নিয়ে ভাববেন না। অন্যের প্রয়জনের ব্যাপারে সংবেদনশীল হন। যদি চান যে, তারা আপনার সময়ের সম্মান দিক, তবে তাদের সময়কেও আপনি সম্মান দেন।

প্রতিটি মানুষই সম্পদের বৃদ্ধি চায়। কিন্তু আমারা ‍ভুলে যাই যে, ভালো কাজ ছাড়া আমাদের সহায়-সম্পদ এবং আমাদের প্রিয় মানুষগুলোর কিছুই আমাদের সাথে (চিরকাল) থাকবে না।

উঁচ পর্যায়ে থাকা লোকদের নিয়ে হিংসা করবেন না। কেননা, যতই সফন হবেন, ততই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। তাই সর্বদা বিনয়ী হন। এটা আপনার পথকে ধীরস্থিরভাবে রোধ করতে সাহায্য করবে।

অপ্রয়োজনীয় ক্ষতি থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। সবাই যখন অত্যধিক মনোযোগের কেন্দ্রে চলে যায়, তখন শান্ত এরং একান্ত গোপন থাকুন। অন্তরকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে দু’আ করুন।

অন্যের জন্য আজ ভালো কিছু করুন। এর দ্বারা সর্বপ্রথম আপনিই উপকৃত হবেন। আল্লহর কাছ থেকে অশেষ পুরষ্কার লাভের এক স্বস্তিাদায়ক অনুবুতি আপনি অনুভব করবেন।

 নম্র কথা বলুন, সহনশীল হন

আপনার সামার্থ্যের মধ্যে বাঁচাতে এবং দুশ্চিন্তা ছড়াই (অন্যদের) দিতে শিখুন। সর্বশক্তিমান ‍আল্লাহ আপনাকেও দেবেন, যদি আপনার নিয়ত সৎ হয়। আখিরাতের অনাগত জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেন।

আপনি কতটা নিষ্ঠাবান, তার ভিওিতে আপনার কৃতকের্মকে ওজন করা হয়। আপনার ভালো কাজ ও প্রচেষ্ঠার প্রতিটি বৃওান্ত সমাজিক যোগাযোগ মাধোমে পোস্ট করে, সেগুলো নষ্ঠ করবেন না।

যখন আপনি কাউকে দেখেন যে, সে তার পথ থেকে বিচ্যুত, তখন সাহায়্যের হাত বাড়ান। মূল্যায়ন করবেন না এবং দম্ভ দেখবেন না। নম্র কথা বলুন। সহনশীল হন। তার জন্য দুআ করুন।

আপনার উদ্দেশ্যের কথা অন্যকে ব্যাখ্যা করতে হবে, এমনটি মনে করবেন না। আপনার অন্তরে কি আছে, তা ‍আল্লহ অবগত। তাঁন কাছে জবাব দিতে আমরা সবাই বাধ্য, তাঁন সৃষ্ঠের কাছে নয়।

যবন কেউ আপনার কাছে মিথ্যা বলে, তখন তাদের সাথে কাঁটি হন। যখন তারা আপনার বিশ্বাসের বেঈমানি করে, তখন সত্যনিষ্ঠ থাকুন। যখন তারা আগ্রসী হয়, তখন সদয় হন। নিজের প্রতি আন্তরিক হন।

আখিরাতের ভালোবাসা আবাদ করুন

তারা এ ধরনের মানুষ এবং তাদের সাথে অমুক ও অমুকের সম্পর্ক রয়েছে, যারা এগুলো সার্বদা ফলাও করে বলতে থাকে, তাদের ব্যাপারে সাবধান হন। বনের রাজা কখনো তার ক্ষমতার ব্যাপারে বাড়াই করে না।

আপনার চামড়ার রং, আর্থিক অরস্থা বা অন্য কিছুই সর্বশক্তিমান আল্লাহর কেছে মূখ্য নয়, শুধু তাঁর নৈকট্য লাভে আপনার আন্তরিক প্রচেষ্ঠাই তাঁর কাছে মূখ্য।

আপনি যা-ই দিতে পারেন এবং যখন পারেন, তা ভালো একটি উদ্দেশ্যে ব্যয় করুন। (তবেই) দিবসে আপনি সবচেয়ে ধনী ও সুখি মানুষের একজন হবেন।

আপনার ভালো কাজ সও্বেও দুনিয়া যদি আপনাকে এখনো না জানে, তবে বিক্ষুব্ধ হবেন না। সর্বশক্তিমান আল্লাহর অবগত আছেন এবং জন্নাতে ফেরেশতাগণ আপনাকে নিয়ে আলোচনা করছে।

যতক্ষণ আপনার অন্তরকে আপনি এই দুনিয়ার ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ করবেন, ততক্ষণ আপনি শূন্যতা অনুভব করবেন। (অন্তরে) আখিরাতের ভালোবাসা আবাদ করুন। এই ভালোবাসাই আপনার অন্তর পূর্ণ করবে।

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.