হিংসা থেকে মুক্ত অন্তরই সুখী পর্ব- ৩ (ফিরেএসো)

হিংসা থেকে মুক্ত অন্তরই সুখী

 যখন আপনি উপদেশ দিতে চানতখন তা এমনভাবে দেন যেন লোকেরা আপনার থকে শুনতে চায়। কঠোর  আগ্রাসী হবেন না। তাদের পথ শুধরাতে চাইলে এবং তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে ‍আন্তরিকতা হন। আপনার আন্তরিাতা দীর্ঘকাল মনে রাখা হবে

যাখন আপনি অন্যকে গুধরাতে চানতখন আবেগের সাথে তাদের নিকট পৌছানোর একটা পথ আপনাকে খুঁজে নিতে হবে। মাঝে মাঝ যখন উপদেশ দেনতখন লোকেরা আরও বেশে আগ্রহি হয়ে উঠে। এমনকি আপনার উপদেশ দেওয়াসর পূর্ব মুহূর্তের চেয়েও খারাপ হয়ে ওঠেশুধুমএ আপনার উপদেশ দেরয়ার ভাঙ্গির কারণে। এজন্য সবচেয়ে মার্জিত শব্দ ব্যাবহার করুন এবং আন্তরিক হন

কোনো কিছুর জন্য যখন আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে হাত তুলি, তখন আমাদের উচিত আস্থা এবং নিশ্চয়তার কাছে হাত তুলি, তখন আমাদের উচিত আস্থ এবং নিশ্চয়তার সাথে এই দু’আ করা যে, তিনি এর জবাব দেবেন। অলস মন ও বিক্ষিপ্ত হৃদয় নিয়ে দু’আ করা কখনোই উচিত নয়। মনপ্রাণ দিয়ে দু’আ করুন। অনবরত চাইতে থাকুন। ধৈর্যশীল হন এবং হাল ছেরে দেবেন না।

যদি পারেন, কম কথা বলুন। যদি ভালোকিছু নাইবা বলেন, তবে চুপ থাকুন। আর যদি খারাপ কিছু দেখেন, তবে ঐদ্ধত্যের সাথে বরং বিনয়ের সাথে উপদেশ দেন।

হিংসা থেকে মুক্ত অন্তরই সুখী। অন্যের জন্য সুখি হন, এতে আপনিও সুখ পাবেন। জেনে রাখুন, কে কোনটা পাবে কেনো পাবে, তা সর্বশক্তিমান আল্লহ নির্ধারন করেন।

মন পরিবর্তনের মুহূর্তগুলো

আপনি যদি অন্যদের সাহার্য করতে না পারেন, তবে তদেরকে যন্তনা দেবেন না। পনিশেষে আমাদের চরিএ এবং অন্যের উপর আমরা যে প্রভাব রাখি, তা-ই মুখ্য। এমন এক জীবনযাপন করুন, যা গুরুত্ববহ।

প্রতিটি দিন আপনি আপনার সালাত পরিপূর্ণ মনোনিবেশ করতে নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানান। মনোযোগ হরণকারী দুনিয়াবি জিনিসগুরো দুরে ‍সরান। আল্লাহর প্রতি মনো-যোগ নিবদ্ধ করুন তাঁর যা হক, তাঁই তা দেন।

এমনসব মানুষের সাহাচর্যে থাকুন, যারর আপনাকে হড়ে তোলে এবং আপনার জন্য ভালো অভিপ্রয় রাখে; তাদের সাাথে নয়, যারা এমন ভাব ধরে যে, তারা আপনার খেয়াল রাখে, কিন্তু তার আপনার সমালোচনা করে এবং (সুযোগ পেলে) পেছন থেকে ছুরি মারবে।

ভুল উদ্দেশ্য সামনে রেখে আমরা যদি কোনো কাজ কার, তবে তার জন্য অবমূল্যায়িত হওয়া এবং প্রতিদানহীন বোধ করাটা আমাদের জন্য স্বাভাবিক। আল্লাহর সন্তষ্ঠির জন্য কাজ করুন এবং তিনি আপনাকে পুরস্কৃত করবেন।

যখন আপনার পর্যাপ্ত আছে, তখন নিজেকে বিনয়ী রাখতে পারাটাই অন্যতম বড় এক পরীক্ষা। আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করুন। তিনি আপনাকে আরও বেশি দান করবেন।

কখনও হাল ছেড়ে দেবেন না 

অন্যকে আপনি দিতে পারেন, দেমনই মহান এক উপহার-দোয়া। যখন কেউ অভাবে থাকে, তখন সাহায্যের হাত বারিয়ে দেন। যাদের আপনি ভালোবাসেন ও সম্মান করেন, কেবল তাদের জন্য এমনটি করবেন না। কেননা, তা সহজ। বরং যাদেরকে আপনি চেনেনে না, তাদের জন্য এমনটি করুন। এমনটি করা খুবই কঠিন কাজ এবং তা আপনার অন্তরের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে।

অন্তরেকে নরম করার জন্য (আসুন আমরা) সর্বদা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে দু’আ করি। যারা অকল্পনীয় কষ্ঠ ভোগ করছে, তাদের জন্য আমরা যেন সহানুভুতি বোধ করি। তাদের জন্য জরম আবেগ দিয়ে দু’আ করতে শিখি, যেমনটি আমারা নিজেদের জন্য এবং নিজেদরে ভালোবাসার মানুষের জন্য করি। সার্বোপরি, আমাদের অন্তর যেন বিনয়ী থাকে।

জীবন মানেই কুরবানি। (তবে) এই কুরবানি বাছাই করে নেওয়ার মতো। আপনার চাওয়া সবই আপনি পাবেন না। কিন্তু যকন আপনি জানেন যে, ‍আপনি পাবেন না। কিন্তু যখন আপনি জানেন যে, আপনি সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তষ্ঠির জন্য এই কুরবানি করছেন, তখন তা আরও অর্থবোধক হয়ে ওঠে। নিশ্চিভাবে তাঁর পুরষ্কারই সর্বোওম পুরষ্কার।

আপনার যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ঠ থাকুন, তবেই আপনি সুখী হবেন। সামান্য কিছু নিয়ে ধৈর্য ধরুন; বড় কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা হন। আল্ল্হর সিদ্ধান্তগুলোকে মেনে নেন। সেগুলোই সর্বোওম।

কিছু মানুষ সব সময় আপনার উদ্দেশ্যের ভুল মর্মকে বেছে নেবে এবং সব সময় ত্রুটি খুঁজবে। আপনি যা-ই করেন না কেন, আপনি তাদেরকে বদলাতে পারবেন না। তাদের জন্য দু’আ করুন।

বিনয়ী হোন

যখন আপনি দেবেন, তখন আপনি পারবেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা নিশ্চিত করবেন। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, আপনি কি দিয়ে যাচ্ছেন? (কেননা), কোনো একদিন তা আপনার কাছেই ফিরে আসবে।

যারা আপনার কল্যাণ চায় এবং আন্তরিকতার সাথে আপনাকে শুধরে দেয়, তাদেরকে ভালোবাসুন। তাদেরকে নয়, যারা আপনার দোষ-ত্রুটি (সবার সমান) তুল ধরতে চায়। (প্রকৃতপক্ষে) মুমিন ব্যাক্তি তার ‍ভাইয়ের জন্য আয়নাস্বরূপ।

যা-ই চান না কেন, তা আল্লাহর কাছে চান-আন্তরিকতার সাথে চান; রোগ থেকে আরোগ, বিষন্নতা থেকে মুক্তি এবং আপনার কষ্ঠের পরিএাণ। তিনি সাড়া দেবেন। তাঁর উপর আস্থা রাখুন।

নিজের জন্য যেভাবে দু’আ করেন,সেভাবে অন্যের জন্য দু’আ করুন। সেই সাথে আপনি যাদেরকে পছন্দ করেন না, তাদের জন্যও দু’আ করেন ভুলে যাবেন না । বেশি না হলেও তাদেরও আল্লাহকে ঠিক ততটাই প্রয়োজন, যতটা আপনার।

পিতামাতাকে সর্বদা সম্মান করুন, যদিও আপনি তাদের সাথে একমত না হন । দৃশ্যপট থেকে আপনার ইগো বা আমিত্বকে দূরে রাখুন এবং তাদের সাথে আন্তরিক ব্যবহার করুন ।

সর্বদা নরম ভাষা ব্যবহার করুন

যদি কিছু চান, তাবে তা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছেই চান; ভালো চাকুরি, দায়িত্বশীল স্ত্রী বা স্বামী (যাই হোক না কেন)? নিষ্ঠার সাথে হাত তুলুন । আল্লাহর জন্য কিছুই অসম্ভ নয় ।

পা মাটিতে রাখুন এবং বিনয়ী থাকুন । অন্যকে ছোট করে দেখবেন না, তারা বাহ্যিকভাবে যতই অসচ্ছল হোক না কেন । মনে রাখবেন, যাকে আজ ছোট করে দেখছেন, হয়তো আগামীকাল তাকে শ্রদ্ধ করতে হবে । জীবন এমনই ।  

অন্যের (সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে) সর্বদা নরম ভাষা ব্যবহার করুন । নেতিবাচকভাবে মানুষদের সাথে লড়াই করার বদলে বরং তাদের জন্য ইতিবাচক প্রভাবকে পরিমান হন । তাদেরকে অনুপ্রেরণা দিয়ে বলীয়ান করুন । তাদের প্রশংসা করুন এবং তা আন্তরিকভাবেই করুন । আন্তরিক হন । হয়তো এখন থেকে বছরের পর বছর আপনার কথা তাদেরকে প্রভাবিত করবে ।

কখনো বলবেন না যে, দেওয়ার মতো আপনার কিছুই নেই । দেওয়ার মতো কিছু না কিছু আপানার কাছে সব সময়ই আছে । হয়তো তা আপনার কাছে খুব বেশি নয়, কিন্তু সর্বক্তিমান আল্লাহর কাছে তা আপনার আশেপাশের সব থেকে ধনবানের দেওয়া উপহারের চেয়েও উওম কিছু ।

যখন আপনি সর্বক্তিমান আল্লাহকে ডাকেন, তখন আন্তরিকতা এবং এই বিশ্বাসের সাথে ডাকুন যে, আপনার আহ্বানের জাবাব দেওয়া হবে । সর্বোপরি ধৈর্যশীল হন এবং তাঁকে ভরসা করুন ।

No comments

Theme images by caracterdesign. Powered by Blogger.